পূর্ব বর্ধমান জেলার এই শিব মন্দিরের প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে এক অজানা ইতিহাস, কোন মন্দির? জেনে নিন সমস্ত তথ্য

পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত এই জামালপুর গ্রাম। সেই গ্রামেই রয়েছে বুড়োরাজতলা মন্দির। একবার ঘুরে আসতেই পারেন এই মন্দিরে। কিন্তু কি আছে এই মন্দিরে? এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার পিছনে রয়েছে কিছু অজানা, যা শুনলে ঘুড়ে আসার ইচ্ছে হবেই।

প্রথমেই বলা যাক, কিভাবে পৌঁছবেন গন্তব্যে। হাওড়া-কাটোয়া বা শিয়ালদহ-কাটোয়া ট্রেনে উঠে পাটুলি ষ্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে ট্রেকার অথবা টোটোতে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন।

এবার ইতিহাসের দিকে প্রবেশ করা যাক।

img_1715104273534_11zon

মন্দিরের এক সেবায়েতের কাছ থেকে জানা যায় যে মন্দির কবে স্থাপিত হয়েছে তা বলা একেবারে অসম্ভব। গ্রামে যদু ঘোষ নামে এক ব্যক্তির কাছে বেশ কিছু গরু ছিল । তারই মধ্যে একটি গরু তৎকালীন জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় যেত। এরপরেই এক অলৌকিক ঘটনা যদু ঘোষ লক্ষ্য করে  সবকিছু পুরোহিত মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়কে জানান। পরবর্তীকালে মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পান এবং দেখেন ওই জায়গায় রয়েছে শিবলিঙ্গ। তারপর থেকেই শুরু হয় পূজার্চনা।

মন্দিরের সেবাইত কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে তিনি শুনেছেন এই মন্দিরে তৈলঙ্গ স্বামী জপ করেছেন বসে। বহু পুরনো মন্দির কিন্তু কত বছর আগে স্থাপিত হয়েছে এটা বলা অসম্ভব তাঁর কাছে। তিনি আরও জানান যে অন্যান্য মন্দিরের থেকে এই মন্দিরের নিয়ম অনেক আলাদা। অন্যান্য মন্দিরে শিবের যেরকম নিয়ম থাকে তার থেকে এই মন্দিরের শিবের নিয়ম সম্পূর্ণভাবে আলাদা রয়েছে।

জানা যায় এই মন্দিরে নাকি শিব শম্ভু নিজে নিজে আবির্ভূত হয়েছেন। 

এই শিবের নিয়মের বিষয়ে অনেকেই জানতে চায়, কারণ এখানের নিয়ম সম্পূর্ণরূপে আলাদা।

1-3176410957_11zon

 সাধারণত, গাজন হয় চৈত্র মাসে কিন্তু এই মন্দিরে শিবের গাজন হয় বৈশাখ মাসে, বৌদ্ধ পূর্ণিমার সময়। প্রত্যেক শিবের যে গৌরীপট্ট থাকে সেটা হয় উত্তরমুখী, কিন্তু বাবা বুড়োরাজের গৌরীপট্ট থাকে পূর্বমুখী। অন্যান্য শিবের মাথায় যে বেল পাতা দেওয়া হয় সেটা উল্টো করে কিন্তু এখানে এই শিবকে বেল পাতা দেওয়া হয় সোজা অবস্থায়।

এই মন্দিরে নিয়মগুলি পালিত হয়ে আসছে সেই পূর্বপুরুষ কাল থেকে।

জানা যায় যে, এই মন্দিরে সবথেকে বেশি ভিড় হয় বৈশাখ মাসে, বৌদ্ধ পূর্ণিমায় গাজনের সময়। সেই সময়ে ১৪-১৫ হাজার সন্ন্যাসীর সমাগম হয়। লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন হয় মন্দির প্রাঙ্গনে।

বছরের প্রায় বেশীরভাগ দিনেই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন এই মন্দিরে।

এই মন্দিরে রয়েছে ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা, তবে সেই ক্ষেত্রে মন্দির কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে জানাতে হবে। যদি মন্দির প্রাঙ্গণে রাতে থাকতে চান তাহলে সেই ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। তবে রাতে থাকার জন্য লাগবে প্রয়োজনীয় নথি এবং ৮২৫০৪০৭২৯৬- এই নম্বরে ফোন করে আগে থেকে আপনাকে বুক করে রাখতে হবে। 

  • ট্যাগ

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...