শ্রীক্ষেত্রে একাদশী পালনের নিয়ম নেই! কেন?

জগন্নাথ ধামে একাদশী পালনের নিয়ম নেই। এর পশ্চাতে আছে একটি বহুল প্রচলিত কাহিনি। প্রভাস খন্ড গ্রন্থ থেকে জানা যায় সেই কাহিনি। ব্রাহ্মণ কন্যা বাল্য বিধবা শান্তা রথারুঢ় দারুদেবকে বহু ক্লেশের পর দর্শন করতে সমর্থ হন। বহু দিনের আশা পূর্ণ হয় তাঁর।

রথযাত্রার পরদিন একাদশী। নিষ্ঠার সঙ্গে শান্তা একাদশী পালনে ব্রতী। কিন্তু জগন্নাথ দর্শনের পথশ্রন্তি, ক্ষুধা, তৃষ্ণায় অতিকাতর। ভক্ত শান্তার এই অবস্থা দেখে শ্রী জগন্নাথ বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে আসেন তাঁর কাছে।

ভক্ত শান্তাকে বলে, ‘ মা, তুমি এই অবস্থায় এমন কষ্ট সহ্য না করে সামান্য হলেও আহার গ্রহণ লর। এভাবে জগন্নাথ দর্শনের ফল নষ্ট করছ কেন?’

শান্তা শান্ত গলায় উত্তর দেয়, ‘আমি একাদশী ব্রত পালন করছি সাধ্যানুসারে। জগন্নাথ দর্শনের ফসল নষ্ট করব কেন বাবা!’

ব্রাহ্মণরূপী জগন্নাথ বললেন, ‘শ্রীক্ষেত্রে উপবাস পালন করে তুমি তোমার পুণ্যফল নষ্ট করছ।’

ব্রাহ্মণী তাঁর কথায় রেগে গিয়ে বলেন, ‘আপ্নি ব্রাহ্মণ হয়ে কী করে আমায় এই ভুল উপদেশ দিচ্ছেন! আপনি ব্রাহ্মণ কুলের কলঙ্ক।’

শান্তার রুদ্রমূর্তি দেখে ব্রাহ্মণ বললেন, ‘মা, তুমি এই সন্তানকে ক্ষমা করো। আমাকে একাদশী ব্রত পালন আত রথারুঢ় জগন্নাথ দর্শনের ফল দয়া করে আমাকে বলো।’

ব্রাহ্মণী তখন বললেন , ‘একাদশী ব্রত পালনে শ্রীহরির চরণ লাভ হয়। জন্ম জন্মের পাপ থেকে মুক্তি মেলে। আর রথে জগন্নাথ দর্শনের ফলে পুনর্জন্ম আর হয় না। জীবাত্না পরমাত্মায় মিলে যায়।’

শান্তার কথা জগন্নাথ নিজমূর্তি ধারণ করলেন। দুঃখিনী শান্তাকে আশীর্বাদ করে বলেন পূর্বে রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য আর আজ তোমাকে আমি শ্রীক্ষেত্রে একাদশী ব্রত পালনে বারণ করছি। আমাকে দর্শন মাত্র এখানে সব পাপ ধুয়ে যায়। আমার মহাপ্রসাদ গ্রহণ করলে পাপ আর কাউকে স্পর্শ করতে পারে না।’

শ্রী জগন্নাথ বলেন, তাঁর মন্দিরের নীচে একাদশী দেবীর মূর্তি আছে। দেবী একাদশীকে দর্শন করলে জগন্নাথের বরে একাদশীর পূর্ণ ফল লাভ হয়। সেই থেকে শ্রী জগন্নাথ ধামে একাদশী পালনের নিয়ম নেই।       

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...