জানা-অজানায় ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন

শুরু হয়ে গিয়েছে বছর শেষের কাউন্টডাউন। পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে আবার এক নতুন বছরে পা রাখা। ঘড়ির কাঁটা রাত বারোটার ঘরে ঢুকলেই এক হবে গোটা বিশ্ব। আতশবাজির আলো, গির্জা মন্দিরে ঘন্টাধ্বনিতে মুখর হবে চারপাশ। চলবে নতুন সময়ের উদযাপন। নতুন বছরের উদযাপন ঘিরে পৃথিবীর নানা দেশে নানা রীতি প্রচলিত আছে। রঙবেরঙ-এর সেই সেলিব্রেশনের কথা রইল এই নিবন্ধে

প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা আজ থেকে প্রায় ৪,০০০ বছর আগে প্রথম নববর্ষ উদযাপন করেছিলেন। পরবর্তী কালে রোমের সম্রাট জুলিয়াস সিজার প্রথম ১ জানুয়ারিকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করেছিলেন। তিনি রোমান দেবতা জানুসের নামে এই মাসের নামকরণ করেন।

যিশুখ্রিস্ট্রের জন্মের পর তার জন্মের বছর গণনা করে ১৫৮২ সালে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি এই ক্যালেন্ডারের নতুন সংস্কার করেন। যা গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত।

বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই কার্যত দিনপঞ্জি হিসেবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরে সারা বিশ্বে নববর্ষের সবচেয়ে বড়ো উদযাপন হয়ে থাকে। সিডনি হারবার ব্রিজ থেকে বছর শুরুর রাতে ৮০,০০০ এরও বেশি আতশবাজি ছাড়া হয়। সিডনি ছাড়াও নতুন বছর উদযাপনের সেরা তিনটি স্থান হল লাস ভেগাস, ডিজনি ওয়ার্ল্ড এবং অবশ্যই নিউ ইয়র্ক সিটি।

আন্টার্কটিকায় ফি বছর নিউ ইয়ারের গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন হয় একটি মিউজিক ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে। সঙ্গীতের এই উত্‍‌সব আইসস্টক হিসেবে পরিচিত। ৪৩ বছর আগে নিউ ইয়র্কে উডস্টক ফেস্টিভ্যালের নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়েছে।

প্রাচীন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন চলত টানা চার মাস। উত্‍‌সবের মেজাজে মশগুল মানুষ সেই সময়টায় কোনও কাজ করতেন না, বন্ধ থাকত যুদ্ধ। চার মাস ধরে শুধু নাচ, গান, পিকনিক ও সেলিব্রেশনের মুডে থাকতেন তাঁরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের মানুষ নিউ ইয়ার ইভে  যে যার বাড়ি থেকে খুঁজে খুঁজে পুরনো যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলি নিয়ে সোজা চলে যান বাড়ির ছাদে। তারপর একে একে সেগুলি ছুড়ে ফেলেন নীচে, রাস্তায়। এইভাবে তে নতুন বছর পালন সেখানকার ঐতিহ্য।

নতুন বছরের প্রথম দিনে কলম্বিয়া, কিউবা এবং পুয়ের্টোরিকোর কিছু কিছু স্থানে, পরিবারের মানুষ একটি বড়ো পুতুল তৈরি করে, যাকে বলা হয় মিঃ ওল্ড ইয়ার।এটি আসলে বিদায়ী বছরের প্রতীক। পুতুলটিকে পুরনো পোশাক পরানো হয়।তারপর মাঝরাতে, পুতুলটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।তাদের বিশ্বাস ,এইভাবে খারাপ স্মৃতি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

বহু দেশে নতুন বছরের প্রথম দিন মটরশুঁটি, হ্যাম এবং বাঁধাকপির মতো খাবার খাওয়া সৌভাগ্যের কারণ মনে করা হয়।এই খাদ্য নাকি সমৃদ্ধি আনে।কিন্তু তাদের মতে, নতুন বছরের শুরুতে গলদা চিংড়ি বা মুরগি খাওয়া উচিত নয়।এগুলি দুর্ভাগ্য বয়ে আনতে পারে।

টোঙ্গা, সামোয়া এবং কিরিবাতি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সর্ব প্রথম নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। এই দেশগুলিতে ভারতীয়  সময় রাত সাড়ে তিনটেতে এ শুরু হবে ১ জানুয়ারি

জনবসতিহীন হাওল্যান্ড এবং বেকার দ্বীপপুঞ্জে, 1 জানুয়ারি শুরু হবে ভারতীয় সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। তারা বিশ্বে সর্বশেষ নববর্ষকে স্বাগত জানাবে ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...