বসন্তে চিকেনপক্স থেকে হার্পিস ঠেকাবে দুপুরে ভাতের সঙ্গে নিম-বেগুন

শীতের শেষ বসন্তের মুখে আবহাওয়া মনোরম হলেও কাবু করে নানা রোগ। সর্দি-কাশির মতো মরসুম বদলের সাধারণ অসুস্থতা ছাড়াও চিকেন পক্স, হার্পিস আর অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে হাম, জলবসন্তের কারণে ভয়ে থাকেন মানুষ।

তেতো স্বাদের জন্য অনেকে এড়িয়ে যেতে চাইলেও নিমকে বলা হয় মহৌষধী। বসন্তের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে বাঙালি হেঁশেলে চেনা দাওয়াই-নিম বেগুন। এছাড়াও নিমপাতা ভাজা, নিম ফুল ও নানারকম তেতোর পদ নিয়মিত খাওয়া হয় রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।

ab388104-b494-46c0-a7d2-bb7714d45d57

গাছের ছাল থেকে ডাল, পাতা থেকে ফুল সব অংশই ব্যবহৃত হয় স্বাস্থ্য রক্ষায়। স্নান থেকে পানে নিমের ব্যবহার। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে প্রায় ৫০০০ বছর ধরে মানুষের শরীরকে নানা রকমের রোগের হাত থেকে বাঁচাতে নিম পাতাকে কাজে লাগানো হয়ে আসছে।

নিমের ইংরেজি নাম Neem, বৈজ্ঞানিক বা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Azadirachta indica A.Juss, পরিবার Meliaceae। নিমকে নিম্ব, ভেপা, তামার আরও আরও অনেক নামে ডাকা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে। খ্রিস্টের জন্মের ৫ হাজার বছর পূর্ব থেকেই ভারত উপমহাদেশে নিমের অস্তিত্ব ছিল বলে জানা যায়।

নিমপাতায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ। তাই ক্ষতস্থানে নিমপাতা বাটা লাগালে সহজে ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে বাঁচা যায়। খোস পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতে নিমপাতার সাথে সামান্য কাঁচা হলুদ পিষে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ আকারে ব্যবহার করলে খোস পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতের উপশম হয়। নিমপাতা কড়াইতে ভেজে গুঁড়িয়ে ভাতের সঙ্গে খেলেও একই উপকার পাওয়া যায়।

নিমপাতা নিয়মিত খেলে কমতে পারে ব্লাড সুগার। কিডনি, লিভারের সমস্যা হোক সব কিছুতেই উপকারী নিম। এই প্রাকৃতিক ভেষজ গ্রহণে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় ও কোলেস্টেরল কমে।

কৃমি নিরসনে নিম ছাল গুঁড়ো করে খেলে মুক্তি সম্ভব।

মাথায় খুসকি বাড়ে হলে নিমপাতা গরম জলে ফুটিয়ে সেই জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিলে খুশকি দূর হয়। নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই উপকারী।

মাথার ত্বকের চুলকানির সমস্যায় নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগাতে পারলে এই চুলকানির সমস্যা কমে যায়। তাছাড়া নিমপাতার রসে চুলের গোড়া শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা বা রুক্ষ ভাব কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে।

নিয়মিত নিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। সংক্রমণ থাকে দূরে। কাঁচা নিমাপাতার রস উপকারী বন্ধু।

নিয়মিত নিমপাতা খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য-সহ নানা লিভারের সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। রক্ত পরিশুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত, ক্ষতিকর উপাদান বের করে শরীর সুস্থ-সতেজ ও রোগমুক্ত রাখতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী।

গায়ের দুর্গন্ধ বা ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। দাঁতের জন্য নিমের ডাল খুবই উপকারী। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আর দাঁতের ফাঁকে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করতে নিম বেশ কার্যকরী।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...