হিমাচলের অধরা দুই শৃঙ্গে অভিযান চালাতে চলেছেন দুই বাঙালি!

তিনি প্রথম আট হাজার পথ আরোহণ করেছিলেন। সেইবার ছিল এভারেস্ট- লোৎসে জোড়া আরোহণ ছিল। এবার সেই হিমালয়ের টানে অভিযান করলেন ধৌলিগিরি (৮১৬৭ মিটার)। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর বাঙালি মেজর, চিরাগ চট্টোপাধ্যায়।

গত বছর তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। কাশ্মীরের ব্রহ্মা শৃঙ্গে অভিযান চালিয়ে সেই ইতিহাসটি গড়েছিলেন তিনি ও তাঁর সাথে বাকি আরোহিরা।

এইবার তাঁরা হিমাচলের এমন দু’টি শৃঙ্গে অভিযান চালাতে চলেছেন, যা আজ পর্যন্ত অধরা! জানা গিয়েছে পর্বতারোহী রুদ্রপ্রসাদ হালদারের নেতৃত্বে তাঁরা অভিযান করবেন হিমাচলের শিকরবেহ্‌  (৬২০০ মিটার) এবং গুপ্ত পর্বতে (৬১৫৯ মিটার)। 

image_2024_02_26T12_09_53_836Z

জানা গিয়েছে বছর পঁয়ত্রিশের নৈহাটির বাসিন্দা চিরাগ নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই গত বছর এভারেস্টে যান। এবার বিশ্বের সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গে অভিযানের পথে। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে প্রথমে কাঞ্চনজঙ্ঘা বা অন্নপূর্ণায় যাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু তাঁর বন্ধুর ধৌলাগিরি বাদে নেপালের বাকি আট হাজারি শৃঙ্গগুলি ছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। তাই বন্ধুর অনুরোধেই ধৌলাগিরি যাচ্ছেন তিনি।

চিরাগ আরও জানিয়েছেন যে ধৌলাগিরিতে মার্চ-এপ্রিলে ঠান্ডা বেশি থাকলে তুষারধসের আশঙ্কা কম থাকে। তাই বর্তমানে ধৌলাগিরি অভিযানের এটাই প্রশস্ত সময়। আগামী ১৫ মার্চ দিল্লি থেকে রওনা দেবেন তিনি।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে কর্মরত রুদ্রপ্রসাদের নেতৃত্বে ৪৩ বছর পরে ব্রহ্মা শৃঙ্গজয় করেছিলেন নয় বাঙালি। জানা গিয়েছে যে এবার সেই দল আগামী মে-জুনে অভিযান চালাবে হিমাচলের স্বল্প পরিচিত ও ঝুঁকিপূর্ণ শিকরবেহ এবং গুপ্ত পর্বতে। এ পথে রুদ্রপ্রসাদের সঙ্গী সপ্তশৃঙ্গজয়ী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, ব্রহ্মাজয়ী রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, নৈতিক নস্কর, দেবাশিস মজুমদার, উদ্দীপন হালদার, তুহিন ভট্টাচার্য, চয়ন চট্টোপাধ্যায় এবং নয়া সদস্য দীপাশ্রী পাল ও নন্দিশ কালিমানি।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যে ১৯৫৫ সালে শেষ এই শিকরবেহ্‌ শৃঙ্গে প্রথম অভিযান চালায় প্রথম অভিযান চালায়। এরপর আর কেউই পারেননি, সেই শৃঙ্গ ছুঁতে। আর এই শৃঙ্গের আড়ালে ঢাকা পড়েই রয়ে গিয়েছে গুপ্ত পর্বত। সেই পথে কারোর পা পড়েছে কিনা কেউ জানেনা!

এবার হিমাচলের অন্যতম অতি-কঠিন শৃঙ্গের পথেই যাচ্ছেন রুদ্রপ্রসাদ সহ তাঁর দল। রুদ্রপ্রসাদ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে চন্দ্র নদীর গা থেকে পাহাড়টি আচমকা খাড়া উঠে যাওয়ায় এর ঢাল অত্যধিক। সেই রুটে প্রায় ১৫,৫০০ ফুটের আগে বেসক্যাম্প তৈরির জায়গা নেই। এলাকার ম্যাপও খুঁটিয়ে করা নেই। আবার অন্য পথ দিয়ে আরোহণ করলে বেসক্যাম্পে পৌঁছতে পাস পেরোতে হবে। ফলে সব দিক থেকে শিকরবেহের সমস্যা অনেকটাই বেশি। তাই তাঁরা ভিন্ন পথ দিয়ে এগোনোর পরিকল্পনা করেছেন। এই যাত্রায় খরচ প্রায় ১৭ লক্ষ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...