এখনও দু টাকায় চিকিৎসা হয়! কোন হাসপাতালে?

কোচবিহার শহরে স্থাপিত একটি কবিরাজ খানা বা সরকারি দাতব্য চিকিৎসালয় তৈরি হয়েছিল সেই রাজ আমলে। শহরের বুকে এখনও রয়েছে এই চিকিৎসালয়। এখানে বিভিন্ন গাছ-গাছড়ার মাধ্যমে ভেষজ উপায়ে ঔষধ তৈরি করা হয় রোগীদের জন্য। বর্তমানে পুরো কোচবিহারের জেলার মধ্যে এটিই হচ্ছে একমাত্র সরকারি কবিরাজ খানা।  

Coch-Behar-News_11zon

এই কবিরাজ খানায় রোগীরা একদম সামান্য মূল্যয় চিকিৎসা করাতে পারে এখনও পর্যন্ত। মাত্র দু টাকা মূল্যে এখানে রোগী দেখেন কবিরাজ এবং এই মূল্যের মধ্যেই ঔষুধ প্রদান করে থাকেন তিনি । একটা সময় এই সম্পূর্ন বিষয়টির রাজাদের দ্বারা পরিচালিত ছিল। তবে বর্তমানে রাজ আমলে স্থাপিত এই কবিরাজ খানার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড।

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সেক্রেটারি বিশ্বদীপ মুখার্জি এক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “রাজ আমলে অবস্থিত এই কবিরাজ খানায় খুব স্বল্প মুল্যে রোগী দেখা হয় এবং ওষুধ দেওয়া হয় আর এখানে একটি মাত্র ডাক্তার রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “কবিরাজ খানা চত্বর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নতুন রুপ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আগামী দিনে রোগী দেখার মুল্য সামান্য বাড়ানো হতে পারে তবে তা ১০ টাকার বেশি হবে না। এই বিষয়ে জেলা শাসকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”

কবিরাজ খানার কবিরাজ তুহিন সেন শর্মা সংবাদ মাধ্যমে জানান, “মাত্র ২ টাকা মূল্যে এখানে রোগী দেখা হয়ে থাকে তাই দুস্থ গরীব মানুষদের অনেকটাই উপকার হয়। অনেক মানুষ ও এখনকার ওষুধ খাওয়ার পরে উপকার পেয়েছেন। তাই তারা কোন সমস্যায় পড়লেই এখানে ডাক্তার দেখাতে এসে থাকেন। বহু মানুষের অনেক জটিল রোগ সেরে গিয়েছে এখানে চিকিৎসা করানোর পর। তাঁরা সম্পুর্ণ সুস্থ অবস্থায় রয়েছেন বর্তমান সময়ে। তাই আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি মানুষ আসেন এখন। তবে সাধারণ মানুষের আয়ুর্বেদ-এর উপর ভরসা রাখা উচিত। কারণ, এর কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় না। তবে আগে গ্রাম্য এলাকায় মানুষেরাই বেশি আসতেন এখানে। তবে বর্তমান সময়ে শহরের মানুষেরাও বহুল ভাবে ভিড় জমাচ্ছেন এই কবিরাজ খানায়।”

রোগী বীণা পাল ও সীমা দাস এই দুই মহিলা এখানে বহুদিন ধরে চিকিৎসা করাতে আসছে, তাঁরা জানান, “এখানে চিকিৎসা করিয়ে আমরা দুজনেই দারুন উপকার পেয়েছি। এখান থেকে দেওয়া ওষুধ বেশ ভাল কাজ করেছে আমাদের দুজনের জন্য। আগে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমরা দুজনেই বাইরে চিকিৎসা করিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে চিকিৎসা করিয়ে আমরা সুস্থ হতে না পেরে এখানে শেষ ভরসা নিয়ে এসেছিলাম। এখানে এসে চিকিৎসা করিয়ে আমরা এখন সম্পূর্ন সুস্থ অবস্থায় রয়েছি।”

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...