জেনে নিন বেহালার সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের সমস্ত অজানা কথা

কলিকাতা-সুতানুটি-গোবিন্দপুর নিয়ে তখনও আমাদের কলকাতা গড়ে ওঠেনি, তখন থেকেই বেহালা অঞ্চল ছিল এক সমৃদ্ধ জনপদ। বেহালা নামের উৎপত্তি নিয়ে নানান কিংবদন্তি প্রচলিত রয়েছে, যেমন প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান নারী চরিত্র বেহুলার নাম থেকেই বেহালার সৃষ্টি। এই অঞ্চলের একটি বিখ্যাত কালীমন্দির হল সিদ্ধেশ্বরী মন্দির।

এই মন্দির যেখানে অবস্থিত, মধ্যযুগে সেই এলাকার নাম ছিল বড়শে বহুলা। কথিত রয়েছে, মাছ ধরার বড়শি থেকেই এই নামের উৎপত্তি। পরবর্তীকালে, মুখে মুখে সেই নাম বদলে গিয়ে, হয়ে গেল বড়িশা।

জানা গিয়েছে যে ১১৭০ বঙ্গাব্দে স্থাপিত হয় এই মন্দির। কালের প্রভাবে সেই মন্দির ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে, এটি আবার র্নির্মাণ করা হয় ১৩৬৮ বঙ্গাব্দে। তাই মন্দিরের সামনের দেওয়ালেই এই দুটি সাল উল্লেখিত রয়েছে।

মন্দিরের গর্ভগৃহে কালীমূর্তি ছাড়াও রয়েছে আরো চারটি দেবীমূর্তি। ষষ্ঠীদেবী, শীতলাদেবী, চন্ডী দেবী এবং মনসাদেবী। এক সময় এই মন্দিরে পুজোর সময় বলি হত। তবে এখন তা বন্ধ।

এছাড়া এই মন্দিরে এলে আপনি পুজো দেওয়ার জন্য প্রচুর সামগ্রী পেয়ে যাবেন। মিষ্টির দোকান রয়েছে।

মন্দিরের এক সদস্য মন্দিরের বিষয়ে জানিয়েছেন যে বংশ পরম্পরা অনুযায়ী এই মন্দিরে পুজো চলে আসছে। এই মন্দিরে বছরে তিনটে কালীপুজো হয়। জৈষ্ঠ্য মাসে ফলহারিণী কালী পুজো, কার্তিক মাসে শ্যামা কালী পুজো এবং মাঘ মাসে রটন্তী কালী পুজো। বলি প্রথা আছে। কিন্তু মন্দিরের তরফ থেকে হয়না, কেউ যদি মানত করে থাকেন সেই বলি শুধু হয়।

সকাল ৮:৩০ থেকে ১২:৩০টা পর্যন্ত মায়ের পুজো শুরু হয়। এরপর মায়ের ভোগ নিবেদনের সময় হয়। মায়ের ভোগে কত কিছু রয়েছে। পোলাও, খিছুড়ি, অন্ন ভোগ, মাছ, মাংস। ভক্তরা যখন যেরকম চান সেইরকমই সব কিছুই করা হয়।

প্রতিদিন সন্ধ্যে ৮:৩০ থেকে ৯টা অব্দি মায়ের আরতি করা হয় এবং বন্ধ হয় রাত ১১টায়।

এই মন্দিরে আসতে হলে কলকাতার যেকোনও প্রান্ত থেকে আসলেও বেহালা ট্রাম ডিপোতে আসতে হবে। আর তারপর সেখানেই আপনি পেয়ে যাবে এই সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের দ্বার। তাহলে আর দেরি করে ঘুরে আসুন মায়ের মন্দিরে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...