কিডনি সুস্থ রাখতে জল কতটা জরুরি?

কিডনি কীভাবে সুস্থ রাখবেন? কিডনি সুস্থ রাখতে জল কতটা জরুরি? শরীরে জলের ঘাটতি কীভাবে বুঝবেন? কিডনি সংক্রান্ত সমস্যার উপসর্গ কীভাবে চিনবেন? ১৪ মার্চ বিশ্ব কিডনি দিবসের বিশেষ পর্বে পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ বিস্ময় কুমার (Dr. Bismay Kumar, Nephrologist )

ডাঃ বিস্ময় কুমার জানিয়েছেন, প্রতিটি মানুষের দেহে জলের নির্দিষ্ট ভারসাম্য আছে। বয়সের ওপর জলের পরিমান নির্ভর করে। ৬০ কেজি ওজন বিশিষ্ট পুরুষের প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তার কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে জলের প্রয়োজন। অত্যাধিক পরিশ্রমসাধ্য কাজ, ঘাম বেশি হয় যাদের তাদের দিনে প্রায় চার লিটার জল খেতে হবে। অন্যদিকে যারা কর্পোরেটে কাজ করে, রোদে বেরনো কম, ঘাম বেশি হয় না তাদের দুই থেকে আড়াই লিটার জল যথেষ্ট। আবহাওয়া, তাপমাত্রাও জলের মাত্রা নির্ধারণ করে। যেমন শীতকালের তুলনায় গরমকালে জলের চাহিদা বেড়ে যায়।

কিডনির কাজ আমাদের শরীরে বর্জ্য নিঃকাশন। তার মাধ্যম জল। জল পানের পরিমান কমে গেলে আমাদের শরীরে বর্জ্য নিঃকাশন বাধা প্রাপ্ত হবে। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ইউরিক অ্যাসিড, ইউরেড আস্তে আস্তে জমাট বাঁধতে শুরু করে। কিডনিতে স্টোনের সমস্যা দেখা যায়। ইউরিনের বেগ কমে যায়। সেই থেকে ইউরিন ইনফেকশন অথবা কিডনি ইনফেকশন বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেড়ে যায়। ডিহাই ড্রেশনের জন্য ইউরিয়ার পরিমান বেড়ে যায়। কিডনির সমস্যার আশংকা বেড়ে যায়। কিডনিকে বলা হয় জিএফআর। প্রতি মিনিটে ১২৫ এমএল রক্ত চাপ সহ্য করে ও পরিশুদ্ধ করে। যদি মাত্রাতিরিক্ত জল খাওয়া হয় তাহলে বারবার প্রস্রাবের সমস্যা থাকে। সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়।

ডায়াবেটিস রোগীদের জলের নির্দিষ্ট মাত্রা থাকে সেটায় বিঘ্ন ঘটলে পা ফোলা, পেট ফোলা অথবা প্রেশারের সমস্যা হতে পারে। যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের বেশি জল খেলে শ্বাস কষ্ট, পাম্পিং-এর সমস্যা হতে পারে। আজকের পৃথিবীতে ১০ জনের মধ্যে একজন কিডনির সমস্যায় ভুগছে। একাধিক রকমের কিডনির সমস্যা হতে পারে। অন্য অসুখের সঙ্গে মিশে থাকতে পারে কিডনির সমস্যা। কিডনির সমস্যা অনেক সময় সাইলেন্ট কিলার হিসেবে দেখা দেয়। অর্থাৎ তার কোনও লক্ষণ বোঝা যায় না। যাদের বয়স ৪৫-এর ওপর। বংশগত কিডনির সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত চেকআপ করানো উচিত। পা ফোলা, প্রস্রাবে ফেনা হওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবের রঙ বদল, পরিমান কমে যাওয়া এরকম লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...