চোখের যত্নে জরুরী বছরে একবার কমপ্লিট চেকআপ, বললেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিবাশীষ দাস

আমাদের শরীরের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের পাঁচ ইন্দ্রিয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে চোখ যেন একটু বিশেষ। চোখ দিয়ে আমরা জগৎ দেখি। কিন্তু শরীরের অন্য অঙ্গের বিষয়ে আমরা যতটা সচেতন চোখের ক্ষেত্রে অনেকটাই যেন তা শিথিল হয়ে যায়। যতক্ষণ না চশমা উঠছে, বা দেখা ঝাপসা হচ্ছে, ততক্ষণ হেলদোল নেই। শুরু থেকেই যদি যত্নবান হওয়া যায় তাহলে এড়িয়ে চলা যায় অনেক সমস্যা। চোখের প্রায় সব ধরনের সমস্যার চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে 'শঙ্করা জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট' চিকিৎসালয়ে। সম্প্রতি এই হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিবাশীষ দাসের সঙ্গে চোখের সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন জিয়ো বাংলার প্রতিনিধি।

প্র: আমদের চোখের যত্ন কীভাবে নেওয়া উচিত? অনেকেই আছেন যাদের চোখে পাওয়ার নেই তারা কিন্তু চোখের যত্ন ঠিকভাবে নেন না। সেটা কীভাবে নেওয়া উচিত?
ডাঃ শিবাশীষ দাস: চোখের যত্ন বা চোখের হেলথের জন্যে আমাদের চেকআপ করা খুব জরুরি। আমরা যখন পিরিয়াডিক চেকআপ করতে যাই তখন একদম দূরের লেখা আর কাছের লেখা দেখার সময় আমাদের চোখের সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের চোখের ভিতরে পর্দা ছাড়াও অন্যান্য অংশ রয়েছে। যেখানে কোন রোগ দেখা দিলে প্রাথমিক পর্যায়ে চোখের দৃষ্টি শক্তির তেমন ক্ষতি করে না। যেমন- গ্লুকোমা চোখের প্রেসার বেড়ে হয়। কিন্তু এই রোগ যখন দেখা দেয় তখন কাছের লেখা বা দূরের লেখা দেখতে কোনও সমস্যা হয়ে না। যখন রোগটা ছড়িয়ে যায় তখন সেটার চিকিৎসা করা কঠিন হয় পড়ে। তাই যখন তার দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিক ছিল তখন যদি আমরা রোগটিকে নির্ণয় করতে পারি বা ট্রিটমেন্ট করতে পারি। তাহলে রোগীর দৃষ্টি শক্তি আর ক্ষয় হবে না। সেই কারণে একটা রেগুলার কমপ্লিট চেকআপ করে নেওয়া উচিত। তবে কমপ্লিট চেকআপ মানে শুধুমাত্র চোখের পাওয়ার আছে কিনা তার চেকআপ নয়। এর মানে চোখের প্রেসার, নার্ভ ও অন্য সব কিছুর চেকআপ। বছরে অন্তত একবার এই ধরনের চেকআপ করানো উচিত।

প্র: 'শঙ্করা জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট'-এ আই চেকআপের খরচ কেমন?

ডাঃ শিবাশীষ দাস: আমরা এই হাসপাতালে জেনারেল কনসালটেশনের জন্যে পাঁচশো টাকা করে পড়ে। কিন্তু আমারা সকল রোগীদের কমপ্লিট চেকআপের ব্যবস্থা রেখেছি। অর্থাৎ যদি কোনও রোগীর চোখের পাওয়ার দেখতে আসেন। তাহলে তার কমপ্লিট চেকআপ করা হবে। যার মধ্যে তার অন্য কোনও সমস্যা থাকলে সেটাও ধরা পড়ে যাবে।

প্র: আমাদের মধ্যে অনেকেই কম্পিউটারের সামনে অনেকক্ষণ থাকতে হয়। এই কম্পিউটার থেকে কীভাবে চোখকে বাঁচানো সম্ভব?

ডাঃ শিবাশীষ দাস: আজকের দিনে কাউকের কম্পিউটার ছাড়া কাজ করতে বলা যাবে না। তাই কম্পিউটার ব্যবহারে আমাদের যে চোখের সমস্যাগুলো হয় তা যাতে কম হয়ে তাই আমরা সেই দিকে নজর দিতে পারি। বেশিক্ষণ কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে চোখের ব্লিকিং রেটটা কমে যায়। তাই আমাদের চোখের হালকা জ্বালা ভাব অনুভব করি। সেই কারণে কম্পিউটারে ২০ মিনিট কাজ করার পর আমাদের ২০ সেকেন্ডের ব্রেক নিতে হবে। যার ফলে আমাদের ব্লিকিং রেটাও বাড়ে। তবে যদি বেশি জ্বালা করে তখন আই টিয়ারড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্র: 'শঙ্করা জ্যোতি আই ইনস্টিটিউট'-এ মানুষ কী কী সুবিধা পাবেন?

ডাঃ শিবাশীষ দাস: এখানে চোখ রিলেটেড সব সমস্যার চিকিৎসা করা হয়। ছানি থেকে শুরু করে রেটিনা সার্জারি, গ্লকোমা, রেটিনা ইভেলুয়েশান, এম আই ভি এস টেকনোলজির মাধ্যমে রেটিনা চিকিৎসা ও চোখের অন্যান্য সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

প্র: চোখ সার্জারি কী খরচা সাপেক্ষ? সার্জারির পর কী চোখের ক্ষতি হয়?- এই ধারনাগুলো রয়েছে অনেক মানুষের মধ্যে। আপনি কী বলবেন এই বিষয়ে?
ডাঃ শিবাশীষ দাস: খরচা সাপেক্ষের ব্যাপরটা ডিপেন্ড করছে কী রকমের সমস্যা রোগীর দেখা দিয়েছে তার উপর। তবে এই হাসপাতালে সব শ্রেণীর মানুষের জন্যেই চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। গরীবদের জন্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সার্জারির করা হয় আবার ৫০ হাজার-৬০ হাজার টাকার উপরেও সার্জারি করা হয় এখানে।

প্র: এখন মোস্ট ট্রেন্ডিং অপারেশন হল ল্যাসিক। সেই সুবিধাটা কী এখানে পাওয়া যায়?
ডাঃ শিবাশীষ দাস: না, এখনও আমাদের নিউটাউন ব্রাঞ্চে এই ব্যবস্থা শুরু হয়নি। কিন্তু আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে ল্যাসিক শুরু হবে এখানে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...