হার্ট অ্যাটাক আর হার্ট ব্লকেজের তফাৎ কী?

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কীভাবে চিনবেন? হার্ট অ্যাটাক আর হার্ট ব্লকেজের তফাৎ কী? হার্ট সুস্থ রাখতে রোজকার জীবনযাত্রা কেমন হওয়া উচিত? হার্টের সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত জানালেন কনসালট্যান্ট, ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ সুপ্রতীপ কুন্ডু (Dr. Supratip Kundu, Consultant Interventional Cardiologist)

ডাঃ সুপ্রতীপ কুন্ডু জানিয়েছেন, হার্ট অ্যাটাক বুঝতে হলে দুটো জিনিস বুঝতে হবে। একটা হার্ট ব্লকেজ কী, তার লক্ষণ ও হার্ট অ্যাটাক হলে প্রকৃতপক্ষে কী হয় লক্ষণ দেখা যায়। অনেকেই হার্টে ব্লকেজ আর হার্ট অ্যাটাক এই দুই জিনিসকে মিশিয়ে ফেলেন।

প্রথম বিষয় হল যতক্ষণ হার্টে ব্লকেজ থাকে ততক্ষণ সেই রোগীর হার্ট অ্যাটাক যে হয়েছেই সেরকম বলা যায় না। যখন হার্টে ব্লকেজ থাকে তখন কিন্তু শুধুমাত্র কিছু উপসর্গ দেখা যায়। রোগী হাঁটাচলা করতে গেলে বুকে চাপ ধরে এবং দাঁড়িয়ে পড়লে সেই চাপটা কমে যায়।

চাপটা প্রধানত হয় ঠিক বুকের মাঝখানে, বুকের বাঁ দিকে বাঁ ডান দিকে নয়। সব সময় ইকো, ইসিজি যে বদল বোঝা যাবে বা অনেকক্ষণ ধরে ব্যথা করবে এমন জিনিস নয়। হার্টের রোগীদের অনেক সময় মনে হয় একটু দাঁড়িয়ে গেলেই তার বুকের চাপ কমে যাচ্ছে। শ্বাস কষ্ট ও হঠাৎ চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে যাওয়া এগুলোও এই সমস্যার তাৎক্ষণিক উপসর্গ। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। কারণ এই ধরনের অনেক রোগীর ক্ষেত্রে পেসমেকারের জরুরি প্রয়োজন দেখা যায়। এই সমস্তই হার্টের সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ। খুব ছোট ছোট উপসর্গ তবে গুরুত্বপূর্ণ। এই উপসর্গ চিহ্নিতকরণে ভুল হলে তখন বিপদে পড়তে হয়। গ্যাসের ব্যথা, শরীর দুর্বল বলে এড়িয়ে গেলে পরে সমস্যায় পড়তে হয়।

হার্ট অ্যাটাক হলে ঘাম হয়। অস্বস্তি হবে। খাওয়ার পর বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে। আগে ভারতীয়রা প্রচুর পরিশ্রম করত, খেলাধূলা হত এখন সে সবে বদল এসেছে। খাবারের অভ্যাস বদলেছে। অনেকটা পশ্চিমী ঘেঁষা। ফলে ওবিসিটি এসেছে। মানসিক চাপ, ধূমপান এসবই হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক করতে পারলে ভাল লিফটের বদলে সিঁড়ি ভাঙ্গুন, ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স করতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার, শাক সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এগুলোই সুস্থ থাকার প্রথম ধাপ।

ধূমপান, ওবিসিটি, ডায়াবেটিস এই তিনটি জিনিস কমবয়সীদের মধ্যে হার্টের রোগের গুরুতর কারণ। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা। ভারত যেহেতু ডায়াবেটিসের রাজধানী হয়ে উঠেছে সেটাও এই কারণেই। হার্টকে সুস্থ রাখতে মনের সুস্থতা, মনের শান্তি খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক। মানসিক চাপ যত বেশি তত হাইপার টেনশন, ডায়াবেটিস বেশি হবে। যখনই মেন্টাল স্ট্রেস বাড়বে বুঝতে হবে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা দশ গুণ বাড়ল।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...