অভিনেত্রী ঈশানী ঘোষের জীবনে কীভাবে শুরু হল সিনেমায় কেরিয়ার?

কৃষ্ণনগরের মেয়ে। ওয়েস্টার্ন ড্যান্সের ছাত্রী ছিলেন একসময়। তারপর পা রাখেন মডেলিং আর ছবির দুনিয়ায়। রাশেদ রাহা পরিচালিত ‘ফ্ল্যাশব্যাক’ ছবিতে দেখা যাবে তাঁকে। ‘জিও জামাই’ সিনেমা দিয়ে নায়িকা হিসেবে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে। দক্ষিণী ও ভোজপুরি সিনেমাতে কাজ করেন। সহজ ছিল না ছবির দুনিয়ায় পা রাখার লড়াই। কীভাবে শুরু হল সিনেমায় কেরিয়ার? কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় কেন তাঁর কাছে খুব স্পেশ্যাল? ‘টলিকথা’র আসরে অভিনেত্রী ঈশানী ঘোষ শেয়ার করলেন জীবনের অজানা গল্প...

জিয়ো বাংলাঃ এই ইন্ডাস্ট্রিতে তোমার পথচলা কিভাবে শুরু?

ঈশানী ঘোষঃ বেশ অনেক বড় লং জার্নি। অনেক বছরের জার্নি। আমি শুরু করেছিলাম ডান্স নিয়ে। প্রিথমে বাড়ি থেকে কেউ সাপোর্ট করেনি। ওয়েস্টার্ন ডান্সার ছিলাম। স্যার আমাকে কনভিন্স করে বাড়িতে। তারপর কলকাতায় আসি। জি বাংলার অ্যাডভার্টাইসমেন্টের জন্য আমায় নেয় ‘এইচ. কে. দত্ত জুয়েলার্স, আর তারপর থেকেই আমার জার্নি শুরু।  

জিয়ো বাংলাঃ টলি ঈন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি সাউথ, ভোজপুরীতে কাজ করছো। কিভাবে শুরু হল এবং কেমন সেই এক্সপিরিয়েন্সটা যদি একটু বলো।

ঈশানী ঘোষঃ একটা বাংলা কাজের জন্য প্রডাকশন হাউসে আমি গেছিলাম। সেখান থেকে একটা মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রির একজন নতুন ফেস, এরকম কাউকে খুঁজছেন। দেখে কিছু মনে হয়েছিল। পাশাপাশি আমাদের মিটিং চলছিল। মিটিং-এর পর আমায় জিজ্ঞেস করে আমার ইচ্ছে আছে কি না। প্রথমে ভাষা জানিনা বলে না বলে বেরিয়ে আসি। পরেরদিন আবার কল আসে। জয়ললিতার মতন একটা চরিত্র নিয়ে সিরিয়াল হবে। সেই থেকেই আমার জার্নিটা শুরু হয়। তারপর ২.৫ বছর মালায়ালাম এবং তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে।

জিয়ো বাংলাঃ প্রথমে যেই ভাষার সমস্যাটা হত, এখন সেই সমস্যাটা কতটা হয়?

ঈশানী ঘোষঃ এখনও হয়। এখন কিছুটা শিখেছি। প্রথম দিন টেনশন না হলেও সেকেন্ড শটে হওয়া শুরু করে। বাড়ি চলে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু অনেক সাহায্য পেয়েছিলেম ডিরেক্টরের থেকে। আবারও অনেক কথাও শুনতে হয়েছিল। পরে ‘বেস্ট অ্যাক্ট্রেস’ অ্যায়ার্ড পেতে সেই ধারণা ভেঙেছিল। বাংলার মেয়ে হিসেবে সেটা আমার কাছে খুবই গর্বের বিষয়। 

জিয়ো বাংলাঃ অভিনয়ের সাথে সাথে এখনও কতটা ডান্স আর মডেলিং-টা করা হয়?

ঈশানী ঘোষঃ এখন আর হয় না। আমার ওয়েস্টার্ন ডান্সের ওপর ৫ বছর হয়ে গেছে। সম্প্রতি আমি যেই ভোজপুরী ছবিটা করলাম। সেটার গান সুপার ডুপার হিট। সেখানে ডান্স করা নিয়ে বেশ অনেকদিনের প্রস্তুতি লেগেছিল। আগের মতন স্কুল লাইফ কলেজ লাইফের মতন সময় পেলে, আমি এখনও ডান্সটা কন্টিনিউ করতে চাই।

জিয়ো বাংলাঃ তোমার নতুন কাজ আসতে চলেছে ‘ফ্ল্যাশব্যাক’, সেখানে তোমার চরিত্রটা নিয়ে যদি কিছু বলো

ঈশানী ঘোষঃ ‘ফ্ল্যাশব্যাক’-এর অভিজ্ঞতা দারুন। কৌশিক দার সাথে স্ক্রিন শেয়ার করাটা একটা দারুন ব্যপার। আমার প্রথম ভয় লেগেছিল, একটা স্পেশাল গানে আমি পারফর্ম করেছি। কৌশিক দা সামনে আসতে প্রথমে খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে অনেক সাহায্য পাচ্ছিলাম। গাইড করত খুব। ফলে, ফ্রেন্ডশিপটা হয়েই গেছিল। আর পুরো ‘ফ্ল্যাশব্যাক’ টিমটাই খুব ভালো।

জিয়ো বাংলাঃ গোটা কেরিয়ারে তোমার কোনও অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা তোমার কাছে খুবই স্মরণীয়?

ঈশানী ঘোষঃ হ্যাঁ আছে। কিন্তু সেটা খুবই কম। খারাপ অভিজ্ঞতাও রয়েছে কিন্তু ভালো অভিজ্ঞতা বেশি রয়েছে। 

জিয়ো বাংলাঃ তুমি বাংলা ও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতে একসাথে কাজ করেছো। কিন্তু এতগুলো কাজের মধ্যে যেই চরিত্রগুলিতে তুমি কাজ করেছো তার মধ্যে তোমার পছন্দের চরিত্রটি কোনটি? কিংবা পরবর্তীকালে তুমি কোন চরিত্রে অভিনয় করতে চাও?

ঈশানী ঘোষঃ আমার পছন্দের চরিত্র হল ‘দূর্গা আইপিএস’ বলে একটি মালায়ালাম প্রজেক্ট করেছিলাম, সেখানের চরিত্রটি। কারণ ওখানে ওই চরিত্রটি খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল আর আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল আইপিএস অফিসার হওয়া। তাই এটা এত পছন্দের। এছাড়া আমি সব চরিত্রেই অভিনয় করে কাজ করতে চাই।

জিয়ো বাংলাঃ আগামী দিনে কাজ নিয়ে তোমার কি পরিকল্পনা রয়েছে আর কি কি কাজ দর্শকদের সামনে আনতে চলেছো তুমি?

ঈশানী ঘোষঃ ২০২৪ সালে বেশ কয়েকটা বাংলা ছবি আসছে আমার। তার মধ্যে ‘সাজঘর’ আছে। বুম্বা দা অর্থাৎ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে দ্বিতীয় হিরোইন হিসেবে কাজ করেছি। এই ছবিতে প্রথম হিরোইনে রয়েছে ঐন্দ্রিলা এবং অঙ্কুশও রয়েছে। এছাড়া ‘ফ্ল্যাশব্যাক’ আসছে। আর একটা খবর রয়েছে কিন্তু এখন বলবো না। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...