শরীর সুস্থ রাখতে বয়স্কদের প্রতিদিনের ডায়েট কেমন হওয়া উচিত?

বয়স্কদের দুধজাতীয় খাবার (Lactose Intolerance) সহ্য না হলে তার বিকল্প কী? শরীর সুস্থ রাখতে তাঁদের প্রতিদিনের ডায়েট চার্ট ( Diet Chart For Older Adults) কেমন হওয়া উচিত? প্রবীণদের (Senior Citizens) জন্য কোন ধরনের খাবার বিশেষ জরুরি? কোন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত? বিস্তারিত জানালেন ডায়েটিশিয়ান সৌরভী মাইতি  (Souravi Maity, Dietitian)

সৌরভী মাইতি জানিয়েছেন,  পঞ্চাশের ওপরে যাঁদের বয়স তাঁদের সাধারণভাবে বয়স্ক মানুষ হিসেবে ধরা হয়। বয়স্ক হলেই নানা রকম রোগ ঘিরে ধরে। এখন সুস্থ বয়স্ক মানুষের সারাদিনে দু’হাজার  কিলো ক্যালারি লাগে। ২০০ গ্রাম  কার্বোহাইড্রেড লাগে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ৫০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেড মানে ৩ পিস পাউরুটি।  ১৫০ গ্রাম সেদ্ধ ভাতের মধ্যে ৫০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেড পাওয়া যায়। ২ মাঝারি সাইজের আলুর পরিমাপও একই।

প্রোটিন বয়স্কদের ক্ষেত্রে একটু কমে যায়।  সারাদিনে যদি ৭৫ গ্রাম প্রোটিন কেউ খায় তাহলে তা লাঞ্চ বা ডিনারে একেবারে না খেয়ে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ আর ডিনারে ভাগ করে নিয়ে খেতে হবে।  এভাবে ভাগ করে খেলে হজমের সমস্যা এড়ানো যাবে।

অনেকগুলি দিক খেয়াল রেখে বয়স্ক মানুষদের ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। উচ্চতা, ওজন, কোন খাবারে অ্যালার্জির সমস্যা আছে কি না, কোন কোন অসুখে ভুগছেন, অস্ত্রপ্রচার হয়েছে কিনা। সারাদিনের কাজকর্মের ওপর নির্ভর করে ডায়েট চার্ট।

তাঁদের মধ্যে ভিটামিন আর মিনারেলের অভাব দেখা যায়।  তাই ক্যালসিয়াম,  আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক ইত্যাদি জরুরি।  সেদ্ধ সবজিতে এই পুষ্টি পাওয়া যায়।  সব্জি সেদ্ধর পর  যে জল বের হয় তাতেই থাকে আসল পুষ্টি, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জল ফেলে দেওয়া হয়, যাতে বাদ পড়ে যায় আসল পুষ্টি।

সুষম খাদ্য বলতে অনেক কিছুকে বোঝায়। যেমন দুধ বা দুধ জাতীয় খাদ্য, সুজি, চিঁড়ে জাতীয় খাবার, ওটস, ডালিয়া। তবে শরীরে কোন রোগ আছে তার ওপর নির্ভর করে।

শিশু থেকে বৃদ্ধ  দুধ অনেকেরই সহ্য হয় না। এই সমস্যাকে ল্যাক্টো ইন্টলারেন্সের সমস্যা বলা হয়।  যাদের এই সমস্যা আছে তাঁরা দই বা ছানা খেতে পারেন। এছাড়া বাজারে ল্যাকটোজ ফ্রি মিল্ক ওটস মিল্ক, রাইস মিল্ক, কোকোনাট মিল্ক পাওয়া যায়। 

ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের সমস্যা যাদের আছে তাঁদের খাবারের তালিকা থেকেই অনেক কিছুই বাদ পড়ে। মধুমেহর রোগীদের ক্ষেত্রে প্রথমেই বাতিল হয় মিষ্টি। তবে শুধু ডায়বেটিস আক্রান্ত বলে নয়, বয়স হলেই মিষ্টিজাতীয় খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনা উচিত। বিস্কুট, সফট ড্রিঙ্কস, সিন্থেটিক ড্রিঙ্কস,  ভাজা খাবার,  ময়দা ও লবনাক্ত খাবার থেকে সাবধানে থাকতে হবে। উচ্চরক্তচাপের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাঁদের নুনজাতীয়  খাবার থেকে দূরে থাকলে ভাল।

ভিটামিন সি-এর উৎস এমন ফল বয়স্কদের জন্য উপকারী, লেবু, আঙুর,  পেয়ারা, তরমুজ, কলা খেতে হবে। তবে ফল খেতে হবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে।  ডিম খাওয়া যেতে পারে। অনেকেরই কোলেস্টেরল হাই বলে ডিমের কুসুম নিয়ে ভয় থাকে। তবে এই ভয় অমূলক। সেক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ আর কুসুম ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাওয়া যেতে পারে।  রাতে ফ্যাটজাতীয় খাবারের বদলে তেলমশলাবিহীন সেদ্ধ খাবার উপকারী।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...