প্রথম ক্যামেরার সামনে অভিনয় অপর্ণা সেনের ছবিতেঃ রাজনন্দিনী

বাংলা ফিল্ম ও ওটিটি দুনিয়ার সুপরিচিত নাম হল রাজনন্দিনী পাল। 'উড়নচন্ডী' মতো ছবি ও 'সম্পূর্ণা'র মতো ওয়েব সিরিজে অভিনয় করে দর্শকদের চমক দিয়েছে তিনি। তবে আজ নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দিলেও ছোটবেলায় ছোট্ট রাজনন্দিনীর ইচ্ছা ছিল শিক্ষিকা হওয়ার। ছোটবেলায় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় তাকে লঞ্চ করার কথা বলেছিলেন।‌ সেই মতো 'উড়নচন্ডী' ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন রাজনন্দিনী। নিজের জীবনের এমন বহু কাহিনী জিয়ো বাংলার আড্ডা উইথ অপ্সরা অনুষ্ঠানে শেয়ার করলেন অভিনেত্রী।


প্র: তোমার অভিনয় জগতে আসার পিছনে কী কারণ ছিল?
রাজনন্দিনী পাল: ছোটবেলা থেকে আমার অভিনেত্রী হওয়ার কোনও ইচ্ছা ছিল না বরং আমার টিচার হওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে মায়ের মতো আমারও নাচ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। অনেক ছোটবেলা থেকেই বুম্বা আঙ্কেল আমাকে বলতো আমাকে লঞ্চ করবে। আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন থেকেই আমার কাছে টেলিভিশনে কাজ করার অনেক অফার আসতে শুরু করে। কিন্তু ২০১৭ সাল নাগাদ আমাকে বুম্বা আঙ্কেলের অফিস থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল 'উড়নচন্ডী' ছবিতে অভিনয় করার জন্য। কিন্তু আমি প্রথম ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেছিলাম অপর্ণা সেনের ছবিতে। যদিও ছবিতে সিনটা নেই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

প্র: তুমি অনেক দিন ধরেই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছো। কেমন এক্সপিরিয়েন্স তোমার?
রাজনন্দিনী পাল: আমার এক্সপিরিয়েন্সটা খুবই ভালো। কিন্তু এই মহামারী পরিস্থিতির জন্য আমার দু' বছর নষ্টও হয়েছে। তবে আমি ভাগ্যবান যে লকডাউন চলাকালীনও আমি কিছু কাজ করার সুযোগ পেয়েছি‌।

প্র: ছোটবেলা থেকেই মাকে দেখেছ শ্যুটিংয়ে যেতে বা নাচের কোনও শো করতে যেতে। কোথাও কী মনে হয়েছে যে মাকে দেখে তুমি ইন্সপায়ার হয়েছ?
রাজনন্দিনী পাল: নাচ, গান নিয়ে আমার ছোটবেলা থেকেই ইন্টারেস্ট ছিল। এছাড়াও আমার পরিবারের সকলেই ক্যালচারালি এনভল্বড ছিল। আমার দিদাও ভালো গান গাইতে পারতেন। আমার ছোটবেলাতে দেখতাম মা খুব ব্যস্ত থাকত নাচ নিয়ে। বাড়িতে থাকলেও বেশিরভাগ সময় নাচ প্রেকটিস করতেন। তাই আমার মায়ের সঙ্গে বেশি দেখা হতো না।

প্র: তুমি প্রথম অভিনয় করেছ 'এক যে ছিল রাজা' ছবিতে। সেখানে ইন্ডাস্ট্রির অনেক জনপ্রিয় অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলে তুমি। সেই এক্সপিরিয়েন্সটা কেমন ছিল?
রাজনন্দিনী পাল: আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে এত বড় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে আমি অভিনয় করছি। খুব ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সব সময় চুপচাপ বসে থাকতাম। কাজ করার পর আমার সব ভয় কেটে গিয়েছিল।

প্র: সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তোমার 'সম্পূর্ণা' ওয়েব সিরিজটি। এই ধরনের গল্পের উপর বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি কাজ হয়েনি। তুমি এই চরিত্রে অভিনয় করার আগে কীভাবে প্রিপারেশন নিয়ে ছিলে?


রাজনন্দিনী পাল: প্রথমে যখন 'সম্পূর্ণা'র গল্পটা আমাকে শোনানো হয়েছিল। তখন আমি গল্পটা শুনেই ‘হ্যাঁ’ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে সিলেক্ট করার আগে একটা অডিশন দিতে হয়েছিল। আমি প্রথমে ভাবছিলাম আমি বোধহয় কাজটা পাবো না। কিন্তু জানিনা কীভাবে পেয়ে গিয়েছিলাম। শ্যুটিংয়ের আগে আমাদের কোনও ওয়ার্কশপ হয়েনি। আমাদের পরিচালক যথেষ্ট সাহায্য করেছেন অভিনয় করার সময়।

প্র: ভবিষ্যতে তোমার কী ধরনের প্রজেক্টে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে?
রাজনন্দিনী পাল: সব ধরনের চরিত্র করার ইচ্ছা রয়েছে।

প্র: অভিনেত্রী হিসেবে ওটিটি ও সিনেমার কোনও চরিত্রে অভিনয় করার সময় কী কোনও পার্থক্য অনুভব করো?
রাজনন্দিনী পাল: ওটিটি আর সিনেমাতে অভিনয় করার সময় চরিত্রায়নের কোনও পরিবর্তন হয় না। অভিনেতা বা অভিনেত্রী হিসেবে তোমার প্রথম কাজ হবে চরিত্রটা সঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা। সেটা যেখানেই হোক না কেন।

প্র: তোমার আপকামিং প্রজেক্টগুলো নিয়ে আমাদের একটু বলো?
রাজনন্দিনী পাল: আমার চারটে ছবির শ্যুটিং হয়েছে। যার মধ্যে একটা কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়েছে।

এবার র‌্যাপিড ফায়ার রাউন্ডে কোয়েশ্চেনের রাজনন্দিনী পাল।

প্র: বাবা, মায়ের সঙ্গে একটা ছুটির দিন কীভাবে কাটাবে?
রাজনন্দিনী পাল: বাড়িতে বাবার মাথা খেয়ে, মায়ের মাথা খেয়ে, বিরিয়ানি খেয়ে আর টিভি দেখে কাটাবো।

প্র: পুজো উইথ ফ্রেন্ড, পুজো উইথ ফ্যামলি নাকি পুজো উইথ বয়ফ্রেন্ড?
রাজনন্দিনী পাল: কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই। তাই ফ্যামলির সঙ্গেই কাটাবো।

প্র: বাড়ির ডাক নাম কী তোমার?
রাজনন্দিনী পাল: চিনি।

প্র: রাজনন্দিনী না চিনি?
রাজনন্দিনী পাল: রাজনন্দিনী।

প্র: তোমার ফেভারিট কুইজিন কী?
রাজনন্দিনী পাল: বিরিয়ানি আর বাঙালি খাবার।

প্র: জীবনে এমন কোনও ঘটনা যেটা হওয়ার পর তোমার মনে হয়েছে। এটা হলে সব কিছুই সম্ভব। সেই ঘটনাটা কী?
রাজনন্দিনী পাল: আমার অভিনয় জগতে আসারটাই আমার কাছে একটু আশ্চর্যের মনে হয়েছিল। তাছাড়া এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি আমার সঙ্গে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...