ফার্স্ট শট দেওয়ার সময় বুঝেছিলাম এটাই আমার ফিল্ডঃ দেবযানী চট্টোপাধ্যায়

ছোট পর্দা এবং বড়োপর্দা দুই জায়গাতেই অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, অভিনয় নিয়ে প্রথম থেকে সিরিয়াস ছিলেন না তিনি। বিয়ের পর প্রথম সিরিয়ালে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। স্বয়ং ঋতুপর্ণ ঘোষ ফোন করে নিজের ছবিতে অভিনয় করার কথা বলেছিলেন। টলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। জিয়ো বাংলার আড্ডা উইথ অপ্সরা অনুষ্ঠানে নিজের জীবনের নানা অজানা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন অভিনেত্রী।

প্র: তোমার ছোটবেলার সময়টা কেমন ছিল?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি। আমাদের পরিবারে জ্যাঠা, কাকা, দাদা, বোন সবাই এক সঙ্গে থাকতেন। আমার বয়স যখন ৯ বছর তখন মাকে হারিয়ে ছিলাম। আমার পুরো জগৎটা ছিল অনেককে নিয়ে। কালী পুজো, বিশ্বকর্মা পুজোর সময় কত মজা করেছি এক সঙ্গে। আমাদের বাড়িতে তুবড়ি বানানো হত। আমার মা বাবাকে সাহায্য করতেন তুবড়ি বানাতে। আমার চলে যাওয়ার পরেও আমাদের পাশে থেকেছেন পরিবারের সকলে। ছোটবেলায় প্রচুর এখেলাধূলা করেছি আমি। সব সময় দাদার সঙ্গে সঙ্গে থাকতাম। ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন সব খেলা হতো আমাদের বাড়ির পাশে একটা বাগানে।

প্র: তোমার পরিবারের সদস্যরা ফিল্ম আর এন্টারটেইনমেন্টে যুক্ত ছিল। তুমি কীভাবে এলে অভিনয় জগতে?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: ছোটবেলা থেকেই আমি নাচ শেখার পাশাপাশি থিয়েটার করেছি। কিন্তু অভিনয় জগতে আমি এসেছি বিয়ের পর। আমার হাজব্যান্ডের বন্ধু ছিল ভরত কল। একবার ভরত আমাকে থিয়েটারে অভিনয় করতে দেখেছিল। তাই আমাকে একটা সিরিয়ালে অভিনয় করার জন্য অফার দিয়েছিল। কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে বেশি সিরিয়াস ছিলাম না। তবে ফার্স্ট শট দেওয়ার সময় বুঝেছিলাম এটাই আমার ফিল্ড। এখানেই কাজ করতে হবে আমাকে।

প্র: তোমার কী মনে হয় ফিল্মে অভিনয় করা আর সিরিয়ালে অভিনয় করার মধ্যে কী পার্থক্য রয়েছে?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: প্রথম দিকে আমি মনে করতাম টেলিভিশন আর ফিল্ম কাছাকাছি যেত। কিন্তু এখন সংজ্ঞাটা বদলে গিয়েছে। আগে ফিল্ম আর টেলিভিশনের মধ্যে খুব বেশি ডিফারেন্স ছিল না। টেলিভিশনে আজকাল যে ধরনের কনটেন্ট দেখানো হচ্ছে নতুন প্রজন্মের কেউ সেটা দেখতে চান না। বহু সিরিয়ালে এক ধরনের গল্প ও এক ধরনের চরিত্র দেখানো হয়। তাছাড়াও চরিত্রগুলো কোনটারই বাস্তবতা নেই। তাই মানুষ ধীরে ধীরে ইন্টারেস্ট হারাচ্ছে।

প্র: পজেটিভ ও নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তোমাকে। কিন্তু তুমি কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাস?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: আমি সব রকমের চরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসি। পজেটিভ, নেগিটিভ ব্যাপাটা টেলিভিশন থেকে এসেছে।

প্র: ঋতুপর্ণা ঘোষের সঙ্গে তোমার কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: ঋতুদার সঙ্গে আমি খুব একটা কাজ করিনি। কিন্তু 'আবহমান' ছবিতে কাজ করবার সুযোগ পেয়েছিলাম আমি। ঋতুদা নিজে আমাকে ফোন করে এই কাজটা করার কথা জানিয়ে ছিলেন। এছাড়াও 'গানের ওপারে'তে আমি কাজ করেছি ঋতুদার সঙ্গে।

প্র: তুমি খুব স্ট্রেট ফরোয়ার্ড। এই কারণে কী ইন্ডাস্ট্রিতে খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: আমার এই বদনামটা আছে। আমি যে সব জায়গায় সব কথা বলে দি এমনটা নয়। কিন্তু কথা বলার সুযোগ পেলে আমি মিথ্যা কথা বলি না। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি শান্ত মেজাজের মহিলাদেরকে বেশি পছন্দ করে। সবার কথা মেনে চলতে না পারলে তুমি কাজ পাবে না।

প্র: কাজ না থাকলে রবিবার তুমি কী করো?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারি। তবে ইন্ডাস্ট্রির সকলের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয় না। কিন্তু আমাদের একটা গ্যাং রয়েছে। তাদের সঙ্গেই আড্ডা দিই।

প্র: কফি পার্সন না টি পার্সন?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: কফি।

প্র: রেনি না সানি পার্সন?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: সানি পার্সন।

প্র: লং ওয়াক না লং ড্রাইভ?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: লং ড্রাইভ।

প্র: তোমার ফেভারিট পাস টাইম কী?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: আড্ডা মারা, কফি খাওয়া, বই পড়া ও সিনেমা, ওয়েব সিরিজ দেখা।

প্র: ওয়েব সিরিজ, ফিল্মস না সিরিয়াল?

দেবযানী চট্টোপাধ্যায়: ফিল্মস প্রথম, ওয়েব সিরিজ সেকেন্ড আর সিরিয়াল আমি দেখি না।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...