শিক্ষার উন্নতিতে ১ কোটি টাকা অনুদান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকার

প্রাক্তনের অনুদান বর্তমান-কে

বেতন ও পেনসনের টাকা জমিয়ে ১ কোটি টাকা  অনুদান দিলেন  অবসরপ্রাপ্তা অধ্যাপিকা।

 

একটা ভালো শিক্ষা বদলাতে পারে একজন মানুষকে। আর একজন ভালো শিক্ষিকা বদলে ফেলতে পারেন গোটা সমাজ।

চিত্রলেখা মল্লিক। এরকমই এক উদাহরণ। ভাঁজ পড়েছে চামড়ায় ।কিন্তু ভাঁজ পড়েনি শিক্ষার প্রতি টানে।  বছর ৭২- এর এই   অধ্যাপিকার মাসিক পেনশন এর অঙ্ক প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা।

গত ১৭ বছর ধরে সাহায্য করে আসছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।

কলকাতা নিবাসী সংস্কৃতজ্ঞ এই মহিলাকে চেনেননা এমন কেউ শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে নেই।

চার দশক যাবৎ  অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত।

মেধাবী বহু ছাত্রছাত্রীরা টাকার অভাবে এগোনোর সুযোগ পাচ্ছেনা। স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা অহরহ থাকলেও, সে রাস্তায় ট্র্যাফিক এর ভিড়।এই কারণেই তাঁর এগিয়ে আসা।

বিড়লাপুর মফস্বলে জন্ম। জীবনের আদর্শ রক্তে পেয়েছেন শিক্ষক বাবার কাছ থেকে। জেনে এসেছেন পিছিয়ে পড়া,অসমর্থদের শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়াটাই আসল শিক্ষা।

সহজ-সরল জীবনকে সঙ্গী করে এগিয়ে এসেছেন এতটা পথ। শিক্ষাই হবে চিরসঙ্গী, ঠিক করে নিয়েছিলেন অনেক আগেই।কোনও পিছুটান রাখবেন না বলেই বিয়ের বন্ধনে নিজেকে বাঁধেননি।

থাকেন ৩৫০ স্কোয়ার ফিটের একটি বাড়িতে। বাড়ির কাজ একার হাতেই সামলান। চলাফেরা করেন বাসে-ট্রামে। উদ্যেশ্য, যত সম্ভব টাকার সঞ্চয় করে অনুদান এর কাজে লাগানো।

আরাম-স্বাচ্ছন্দ্য এইসব শব্দ তাঁর অভিধানে জায়গা পায়নি। প্রয়োজনীয় পোশাক কেনেননা বললেই চলে। আত্মীয়দের থেকে উপহার হিসাবে নেন।

ভিক্টোরিয়া ইন্সটিটিউশন এর পরিকাঠামোগত উন্নয়নে পঞ্চাশ হাজার টাকা  অনুদান দিয়ে ছিলেন তিনি।

কর্মজীবনে অবসর ২০১৩ তে।সেই বছরই হাওড়ার ইণ্ডিয়ান রিসার্চ ইন্সটিটউট ফর ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন কে  ৩১ লক্ষ টাকা দান করেনমা-বাবা’র স্মৃতিতে।

২০১৮ তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কে দেওয়া ৫৬ লক্ষ টাকার অনুদান এখনও পর্যন্ত চর্চার শিরোনামে রয়েছে। ওঁর শিক্ষক পণ্ডিত বিধুভূষন  বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে ছিল সেই  অনুদান ।

প্রমান হল আরও একবার- যিনি একবার হয়ে ওঠেন প্রকৃত শিক্ষক, শিক্ষার ফল বিলিয়ে যান আজীবন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...