কালীপুজো ও দীপাবলির দুদিন পর কার্তিক শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে ভাই ফোঁটা পালিত হয়। রাখী বন্ধনের মতো এই উৎসবও ভাই-বোনের জন্য বিশেষ এক উৎসব। এই উৎসবের আর এক নাম হল যম দ্বিতীয়া।
এই দিনে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁদের দীর্ঘায়ুর কামনা করে তাদের বোনেরা। ভাইয়ের কপালে চন্দনের ফোঁটা দেন বোনেরা। কথিত আছে যে, এদিন নিয়ম মেনে ভাইকে ফোঁটা দিলে যমের ভয় থেকে মুক্ত হওয়া যায় এবং ভাই-বোনের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা কেটে যায়।
এই বছর ভাইফোঁটার দিন নিয়ে সবার মনে একটা বিভ্রান্তি রয়েছে। তাই, আজ চলুন জেনে নেওয়া যাক ভাইফোঁটার তারিখ ও মাহাত্ম্য নিয়ে সমস্ত তথ্য।
এই বছর ভাই ফোঁটা কবে?
এ বছর দুদিন ধরে ভাইফোঁটা পালিত হবে। ১৪ ও ১৫ নভেম্বর। এই দুদিনই ভাই ফোঁটা পালন করা যাবে। পঞ্জিকা অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথি শুরু হচ্ছে ১৪ নভেম্বর দুপুর ২টো ৩৬ মিনিট থেকে এবং শেষ হবে ১৫ নভেম্বর দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে।
হিন্দু ধর্মে উদয়া তিথিতে অধিকাংশ উৎসব পালিত হওয়ার প্রথা রয়েছে। তাই উদয়া তিথি মেনে ১৫ নভেম্বর ভাই ফোঁটা পালিত হবে। পঞ্জিকা অনু্যায়ী, ভাইফোঁটা পালিত হবে আগামী ১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার। শুভ তিথি শুরু হচ্ছে বেলা ২টো ৩৬ মিনিটে এবং সমাপ্ত হবে পরের দিন অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর, বেলা ১টা ৪৭ মিনিটে।
১৪ নভেম্বর ভাইফোঁটার শুভ সময় কখন পড়েছে?
পঞ্জিকা অনুসারে, ১৪ নভেম্বর ভাইফোঁটার শুভ সময় হল দুপুর ২টা ৩৬মিনিট থেকে ৩টে ১৯ মিনিট পর্যন্ত।
এবার আসা যাক, ১৫ই নভেম্বরেও ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় কখন?
উদয় তিথি অনুসারে, ১৫ নভেম্বরও ভাইফোঁটা দেওয়া যাবে। এই দিনে ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত।
এবার আসা যাক ভাই ফোঁটার মাহাত্ম্য কি এবং কেন পালিত হয় এই উৎসব?
হিন্দু ধর্মে ভাই ফোঁটা উৎসবের এক বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এই উৎসব হল ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসাকে অটুট রাখার। শুধু বাংলাতেই নয়, বিহার, মহারাষ্ট্রেও ধুমধাম করে পালিত হয় ভাইফোঁটা।
এই তিথিতে ভাইয়ের মাথায় চন্দনের ফোঁটা দেন বোনেরা। কথিত আছে যে যদি ভাই-বোন য যমুনা নদীর পাশে বসে ভোজন করে, তাহলে তাদের জীবন সমৃদ্ধ হবে।
পুরাণে এই উৎসব নিইয়ে এক প্রচলিত গল্প রয়েছে। সূর্য ও তাঁর স্ত্রী সংজ্ঞার দুই সন্তান যম ও যমুনা। দুই ভাই বোনের মধ্যে প্রচুর ভালোবাসা ছিল। কার্তিক শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে দুপুর নাগাদ যমরাজ যমুনার বাড়িতে যান ফোঁটা নিতে। কথিত আছে যে তারপর থেকেই ভাই ফোঁটার প্রথা শুরু হয়েছে।