শিব-পার্বতীর বিবাহস্থলেই গড়ে ঊঠেছে ক্ষিতি লিঙ্গ একাম্বেশ্বর দেবের মন্দির

শিবের রোষানলে দেবী পার্বতী একবার কালো হয়ে যান। মহাদেবকে তুষ্ট করার জন্য বেগবতী নদীর তীরে এক আমগাছের তলায় বালি দিয়ে শিবলিঙ্গ বানিয়ে পুজো করতে থাকেন পার্বতী। শিব পার্বতীর পুজোয় বাধা সৃষ্টি করার জন্য অগ্নি বর্ষণ করেন। কিন্তু বিষ্ণু রক্ষা করেন তাঁকে। শিব ফের বিঘ্ন সৃষ্টির জন্য গঙ্গাকে পাঠান। কিন্তু দেবী পার্বতীর অনুরোধে গঙ্গাও তাঁর পথ বদলান। বেগবতীতে প্রবল বান আসে। তখন সেই বালির শিবলিঙ্গকে জলে ধুয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে জড়িয়ে ধরেন। তাঁর নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হন শিব। হর-পার্বতীর বিবাহ হয় সেই আমগাছের তলায়।

ek-1

আর সেই আমগাছটির অবস্থান ছিল আজকের চেন্নাই শহর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে কাঞ্চীপুরমের  একাম্বেশ্বর মন্দিরে। দেবী পার্বতীর আলিঙ্গনে গলে গিয়েছিলেন বলে এই স্থানে ভগবান শিবের নাম হয় ‘তাঝুভা কুঝাইনাথার’।

পঞ্চভূত শিব স্থলের অন্যতম কাঞ্চীপুরমের মন্দির। এখানে শিব ক্ষিতি লিঙ্গ। মন্দিরটি পল্লব রাজাদের কীর্তি হলেও পরবর্তীকালে নবম শতাব্দীতে চোল রাজারা নতুন করে এই মন্দির নির্মাণ করে।

২৪ একর জমির ওপর সুউচ্চ মন্দির। একাম্বেশ্বর মন্দির ছাড়াও আছে বিষ্ণুমন্দির, কার্তিক, গনেশ মন্দির। মূল মন্দিরের মন্ডপ পার হয়ে গর্ভ গৃহ। সেখানে আরও নানা দেবদেবীর বাস। মন্দিরের মূল শিব লিঙ্গটি বালি নির্মিত। ভিতরে রয়েছে অসংখ্য শিবলিঙ্গ। তার মধ্যে অন্যতম সহস্র লিঙ্গম। তার গায়ে ১০০৮ টি শিবলিঙ্গ খোদিত আছে। সহস্র স্তম্ভ এবঙ্গ সর্বতীর্থম শিবগঙ্গা কুণ্ডও ভক্তদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

ek-2

একাম্বেশ্বর মন্দিরে দেবী কামাক্ষী আম্মানকে একাম্বেশ্বর মহাদেবের শক্তি হিসেবে মানা হয়। এখানে শিবের সঙ্গে কামাক্ষীরূপী পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল। তাই যুগলদের কাছে বিবাহস্থল হিসেবে এই মন্দিরের খ্যাতি বিশ্ব জোড়া। সেই পুরাকাহিনীর টানেই প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে ফাল্গুনি ব্রহ্ম উৎসবের দশম বা শেষ দিনে শিব কামাক্ষীর বিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় প্রথা অনুসারী এই দিন একাম্বেশ্বর মন্দিরে বহু স্ত্রী-পুরুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...