শ্রী জগন্নাথ জগতের নাথ। তিনি ভক্তের প্রাণের ঠাকুর। বিপদ ঝড়ের মাঝে বিপদভঞ্জক হয়ে পার করে দেন সংসারতরী। তাঁর কাছে ধর্মের বাধা নেই। অনাথের নাথ জগন্নাথকে ঘিরে মিলন ঘটেছে সকল ধর্মের। তাঁর শ্রী নামেই লুকিয়ে আছেন তিনি। তাই পঞ্চক্ষরী ‘শ্রী জগন্নাথ’ শব্দেও হয়ে যায় দেবদর্শন।
পরম ভাগবত ব্রহ্মর্ষিপুরুষ দিবাকর দাস ‘শ্রী জগন্নাথ’ শব্দের ব্যাখ্যায় বলেছেন-
‘শ্রী’ শব্দটি লক্ষ্মী, শ্রদ্ধা, ভক্তি, শোভা প্রদায়িনী শক্তির প্রতীক।
‘জ’- অর্থ সৃষ্টি বা উৎপত্তিস্থল। অর্থাৎ সর্বদেবদেবীসহ চতুর্বেদ, মন্ত্র, যোগ আর সব জ্ঞানের উৎপত্তিস্থল হলেন তিনি। তিনি জ্যোতির জ্যোতি।
‘গ’- এর অর্থ জ্ঞানসর্বস্ব, গজ উদ্ধাররূপ সবরকম দুঃখ নিবারক-তিনি পতিতপাবন।
‘ন্না’- নিত্য, নির্মল, নিরাকার, নির্বিকল্প-তিনি নরক নিবারণকারী।
‘থ’-এর অর্থ সব জীবের হিতকারী। ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ-চর্তুবর্গের উৎপত্তিস্থল। সব ভূতাত্মারূপে বিরাজিত।
চতুরাক্ষর জগন্নাথ শব্দের মধ্যে চারটি মর্তি বিরাজমান। শ্লোক বলে-
‘জ কারশ্চ জগন্নাথঃ গ কার বলদেবকঃ
ভদ্রা ‘ন্ন’কার ভাবেন ‘থ’ কারশ্চ সুদর্শনঃ।’
অর্থাৎ ‘জ’ কারে জগ ন্নাথ, ‘গ’ কারে বলভদ্র, ‘ন্ন’ কারে সুভদ্রা আর ‘থ’কারে সুদর্শন। বলভদ্র, সুভদ্রা, জগন্নাথ আর সুদর্শন- এই চার মূর্তি জগন্নথাময় এবং জগন্নথারে চতুধা প্রকাশ।