ফোড়ন দিয়ে বন্ধ করুন ফোড়ন কাটা

অতিরিক্ত ওজনের ফলে লোকসমাজে অবহেলিত?  বন্ধুরাও সবসময় বেশি ওজনের কারণে আপনাকে নিয়ে মজা করে? খুব সহজে এবং চটজলদি নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে চান? কিন্তু কিভাবে করবেন তা বুঝতে পারছেন না| তাই তো? এর জন্য আপনাকে বেশি পরিশ্রমও করতে হবে না বা নিয়ম করে খাওয়া দাওয়াও করতে হবে না| এর জন্য আপনার যে জিনিসটি লাগবে তাও আপনার রান্নাঘরেই রয়েছে| ফোড়ন দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত মেথি ওজন হ্রাসের এক অব্যর্থ ঔষধি| কিন্তু কিভাবে মেথির ব্যবহার করলে চটজলদি ফল পাওয়া যায় তার দুর্দান্ত ৫টি কৌশল চলুন আজ আলোচনা করা যাক|

১)ভাজা মেথি-

ভেষজ মশলা হিসেবে মেথি বহুল পরিচিত| এছাড়াও বেশ কিছু রান্নায় ফোড়ন দেওয়ার জন্যেও মেথির ব্যবহার বহুল প্রচলিত| কিন্তু ভাজা মেথি যে ওজন কমাতেও খুব ভালো কাজ দেয় তা কি জানা আছে? যদি জানা না থাকে তাহলে চলুন আজ জানা যাক| কড়াই গরম করে নিয়ে সেই কড়াইতে খানিকটা মেথি নিয়ে শুকনো খোলায় অর্থাৎ তেল ছাড়া ভেজে নিন| ভাজা হয়ে গেলে সেই মেথি একদম মিহি করে গুঁড়ো করে নিন এবং এয়ার টাইট কন্টেনারে ভরে রেখে দিন| প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে উষ্ণ গরম জলের সাথে এই গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে হবে| চটজলদি উপকার পেতে চাইলে এইভাবে রোজ ভাজা মেথির গুঁড়ো মেশানো জল পান করে যান|

২) অঙ্কুরিত মেথি বীজ-

ভাজা মেথির মতো অঙ্কুরিত মেথি বীজও ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে| অঙ্কুরিত মেথি বীজে থাকে প্রচুর ক্যারোটিনয়েড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি যৌগ| এছাড়াও মেথির বীজে রয়েছে নানা হজম সহায়ক উপাদান| মেথির দানা বাজারে শুকনো অবস্থায় পাওয়া যায়| তাই সেই মেথির দানা অঙ্কুরিত করার জন্য একটি বাটিতে শুকনো মেথির দানা নিয়ে একটি ভেজা কাপড় চাপা দিয়ে তিন রাত রেখে দিতে হবে| তিনদিন পর দেখা যাবে মেথি যথারীতি অঙ্কুরিত হয়েছে| সেই অঙ্কুরিত মেথি খেতে পারলে ওজন দ্রুত হ্রাস পায়|

৩) মেথি চা-

বারবার চা পানের অভ্যেস অনেকেরই থাকে| কিছু ক্ষেত্রে তা ক্ষতিকর ভূমিকা গ্রহণ করে আবার কিছু ক্ষেত্রে তা উপকারী ভূমিকাও গ্রহণ করে| যেমন সাধারণ চা বেশি খেলে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে বাধ্য| সেরকমই গ্রিন টি বা মেথি চা এইসব খেলে উপকার পাওয়া যায়| মেথি চা ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও ওজন কমানো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে| এর জন্য সামান্য জল দিয়ে কিছু মেথি বীজ বেটে নিন| এবার চায়ের পাত্রে পরিমানমত জল ফুটিয়ে নিয়ে মেথির পেস্ট দিয়ে দিন| এর সাথে ইচ্ছে হলে দারুচিনি বা আদাও দিতে পারেন| সব মশলা একসাথে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিলেই মেথি চা তৈরী| এইভাবে তৈরী মেথির চা খেতে পারলে দ্রুত মেদ ঝরানো সম্ভব হবে|

 

৪) মেথি ভেজানো জল-

মেথি ভেজানো জল পেট ঠান্ডা করতে কাজে লাগে| বহুযুগ আগে থেকেই আমাদের মা-ঠাম্মারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন পেটের যত্ন নেওয়ার জন্য| এই মেথি ভেজানো জল যে ওজন কমাতেও প্রভূত সাহায্য করে তা অবশ্য অনেকেরই অজানা| এই জল খেলে প্রধানত খিদে কম পায় ফলে বেশি খাবার না খাওয়ার জন্য ওজন কমতে থাকে| এর জন্য সারারাত এক গ্লাস জলের মধ্যে এক টেবিলচামচ মেথি নিয়ে ভিজিয়ে রাখুন| সকালে উঠে একটি পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে জলটি ছেঁকে নিন এবং প্রতিদিন সকালে দাঁত মাজার পরেই এই জলটি পান করে নিন| এই জল পানের ফলে শরীর যেমন ঝরঝরে হবে তেমনই ওজনও খুব তাড়াতাড়ি কমতে থাকবে|

৫) মধু মিশ্রিত মেথি চা-

মেথি চা যেমন ওজন কমাতে খুব ভালো কাজ দেয় সেরকমই মেথি চা এর সাথে মধু মেশালে এই চায়ের কার্যক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়| এর জন্য প্রথমেই পরিমানমত মেথি গুঁড়ো করে নিতে হবে| এবার চায়ের পাত্রে গরম জল ফুটিয়ে তার মধ্যে এই গুঁড়ো মিশিয়ে চা তৈরী করে নিতে হবে| সেই চা সম্পূর্ণ ঠান্ডা করে ওইভাবেই ৩ ঘন্টা রেখে দিতে হবে| ৩ ঘন্টা পর এর মধ্যে লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে নিতে হবে| এই চা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকার মেলে যদি এই চা সকালে খাওয়া যায়| এইভাবে বেশ কিছুদিন পান করার পর ওজনের তফাত নিজেই দেখতে পাবেন|

সামান্য একটি ফোড়ন কিভাবে ওজন কমানোর সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে তা আমরা সকলেই জানলাম| তাই এরপর থেকে ওজন কমানোর জন্য সারাদিন জিমে গিয়ে পড়ে থাকারও দরকার নেই বা সারাদিন ডায়েট করে পেট খালি করে ঘুরে বেড়ানোরও দরকার নেই| এর থেকে জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই অতিরিক্ত মেদের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব| অ্যালকোহল যতটা সম্ভব কম পান করা উচিত| একেবারে বেশি পরিমান খাবার না খেয়ে সারাদিন অল্প অল্প পরিমান খাবার যদি বারবার খাওয়া যায় তাহলে শরীরে মেদ জমার সমস্যা থাকে না| তাই যদি মনে হয় ওজন ধীরে ধীরে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে তখনই রান্নাঘরে ঢুকুন আর খোঁজ করুন মেথির| খুব অল্প পরিশ্রমেই পেয়ে যান সুন্দর চেহারা|           

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...