দুর্গাপুজোয় সন্ধিপুজোর মাহাত্ম্য নিয়ে কিছু জানা-অজানা কথা!

পুজো এসেই গেল। বাতাসে বইছে এখন পুজোর গন্ধ। পরের সপ্তাহে মহালয়া। পুজো নিয়ে মেতে গোটা বাংলা। তাই মা দুর্গাকে নিয়ে কিছু জানা- অজানা তথ্য বলা যাক।

অষ্টমী ও নবমী মাঝেই আসে সন্ধি পুজো। আর সন্ধিপুজো মানেই ১০৮টি পদ্ম ও ১০৮টি প্রদীপ দিয়ে মা দুর্গাকে আরতি করা হয়। দুর্গাপুজোর এই মুহূর্তটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রচুর নিয়মকানুন রয়েছে এই তিথিতে।  

কিন্তু জানেন কেন হয় এই সন্ধিপুজো? কী ঘটেছিল এই সন্ধিক্ষণে? আজ তবে এই বিষয়ে কিছু জানকরণ হয়ে যাক। অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে সম্পন্ন হয় সন্ধিপুজো৷ এই সন্ধিক্ষণ দেবীর সামনে বলিদান থেকে অঞ্জলি সবই হয় বিশেষ নিষ্ঠা সহকারে।

অষ্টমী তিথির শেষ চব্বিশ মিনিট ও নবমী তিথির সূচনার চব্বিশ মিনিট, মোট আটচল্লিশ মিনিট নিয়েই হয় সন্ধিপূজার সময়৷ এই সন্ধিপুজোতেই দেবীর সামনে বলিদান থেকে অঞ্জলি সবই হয় বিশেষ নিষ্ঠা সহকারে।

সন্ধিপুজোর মাহাত্ম্য  নিয়ে অনেক কথা রয়েছে। আবার এই সময় নিয়ে রয়েছে নানা লোকের নানা বিশ্বাস।

পুরাণ মতে, অষ্টমী তিথি ও নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে মা দুর্গা আবির্ভূত হন চামুণ্ডা রূপে। এই সময়েই ‘চণ্ড’ ও ‘মুণ্ড’ নামে দুই ভয়ঙ্কর শক্তিশালী অসুরকে বধ করেছিলেন অসুরদলনী মা দুর্গা।‘ চামুণ্ডা’ হচ্ছে মহামায়ার এক রুদ্র রূপ। এই দুই ভয়ঙ্কর অসুরকে বধ করার জন্য দেবী চামুণ্ডা রূপ ধারণ করেন মা দুর্গা।

অন্যদিকে কৃত্তিবাসের রামায়ণেও উল্লেখ রয়েছে রাক্ষসরাজ রাবণ বধের জন্যে মা দুর্গার অকালবোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। সেখানেও তিনি নিষ্ঠা ভরে সন্ধি পুজো করেছিলেন। সে সময় ১০৮ পদ্মের দরকার ছিল। সেই সময় হনুমানকে দেবীদহ থেকে ১০৮ টি পদ্ম ফুল তুলে আনতে বলা হয়। কিন্তু পুজো করতে গিয়ে দেখা যায় একটি পদ্ম কম রয়েছে। তখন রামচন্দ্র তীর দিয়ে তাঁর চক্ষুদান করবে বলে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন মাকে নিবেদন করার জন্য। তখনই দেবী আবির্ভূতা হয়ে তাঁকে থামান।

মনে করা হয় সব অশুভ শক্তির দমন করেন দেবী দুর্গা। তাই খারাপ সময় ও দুষ্টের বিনাশ করতে প্রত্যেক বছর মা দুর্গার আগমন হয়। অন্যদিকে এটাও মনে করা হয় যে, সন্ধি পুজোয় যে চণ্ড-মুণ্ডের কথা বলা হয়, সেটা আসলে মানুষের অন্তরের এক অসুরিক প্রবৃত্তি। সে সব দূরে সরিয়ে দেবীকে শুদ্ধ মনে পুজো করাই সন্ধি পুজোর উদ্দেশ্য।

এই সন্ধিপুজোই হচ্ছে দুর্গাপুজোর অন্যতম এক বিশেষ পর্ব । অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণ বা মাহেন্দ্রক্ষণে এই পুজো হয়, তাই এই পুজোর নামকরণ হয়ে সন্ধিপুজো হিসেবে।

এই বছর, ২২ অক্টোবর, অর্থাৎ রবিবার পড়েছে মহাষ্টমী। বিকেল ৪টে ৫৪ মিনিট থেকে সন্ধিপুজো শুরু হবে এবং ৫টা ৪২ মিনিটের মধ্যে সন্ধিপুজোর সমাপ্তি ঘটবে। পঞ্জিকা অনুযায়ী সন্ধে ৫টা ১৮ মিনিটের মধ্যে সেরে নিতে হবে বলিদান পর্ব।

  • ট্যাগ

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...