অষ্টম জ্যোতির্লিঙ্গের অবস্থান এখানে। একই সঙ্গে পূজিত হন ত্রিদেব।

হিন্দুধর্মালম্বী পুরান অনুযায়ী আছে ৩৩কোটি দেবতা। এই কোটি শব্দের অর্থ সংখ্যাবাচক নয়।শাস্ত্র মতে ৩৩ কোটি শব্দের অর্থ শ্রেণী বা প্রকার। বেদে যে ৩৩ কোটি দেবতার কথা বলা হয়, তা হল ৩৩ প্রকারের উচ্চকোটি সম্পন্ন অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ দেব-দেবী। শাস্ত্রে ৩৩ দেবতার শ্রেণির উল্লেখ পাওয়া যায়। জড় জগতের তিনটি অবস্থা সৃষ্টি, স্থিতি এবং প্রলয়। ব্রহ্মা হলেন সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু হলেন পালনকর্তা, আর শম্ভু বা দেবাদিদেব মহাদেব হলেন সংহার কর্তা।

processed-508ee5ab-e63c-4df4-af16-d8a42ffbaa45_uHrix8by

সারা ভারত  জুড়েই ছড়িয়ে আছে দেবাদিদেব মহাদেবের মন্দির। গ্রাম গঞ্জ থেকে শুরু করে শহর, নগর সব জায়গাতেই।সমতল ভুমিরূপেই যে এই ঈশ্বরের মন্দির  আছে তা নয়।পার্বত্য অঞ্চলেও তিনি সমানভাবে বিরাজমান।তবে সারা ভারত জুড়ে প্রথমদিকে মনে করা হত জ্যোতির্লিঙ্গের সংখ্যা ৬৪। এর মধ্যে ১২টিকে পবিত্রতম বলে গণ্য করা হয়। তিনি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে পূজিত হয় বারোটি জায়গায়।

যে সমস্ত শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভু,অর্থাত্‍ নিজেই স্বয়ং শিবলিঙ্গরূপে অধিষ্ঠিত হয়েছেন, এইরূপে সারা ভারতবর্ষে ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ আছে, সেই সব শিবলিঙ্গকে বলা হয় জ্যোতির্লিঙ্গ।

তারমধ্যে দ্বাদশ জ্যোতিরলিঙ্গের অষ্টম জ্যোতির্লিঙ্গ হলেন ত্র্যম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ। এই জ্যোতির্লিঙ্গে একসঙ্গে পূজিত হন ত্রিদেব।

এই জ্যোতির্লিঙ্গ নাসিক এর কাছে গোদাবরী নদীর তীরে অবস্থিত। এই মন্দিরের কালসর্প দোষ নিবারণের জন্য মানুষ সব সময়ের জন্য পূজা-অর্চনা করে থাকেন। মন্দিরের অভ্যন্তরে তিনটি ছোট্ট ছোট্ট শিবলিঙ্গ রয়েছে যা কিনা ত্রিদেব অর্থাৎ ব্রহ্মা-বিষ্ণু এবং মহেশ্বর এর প্রতিক হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এই লিঙ্গের চারপাশে একটি রত্ন খচিত মুকুট স্থাপন করা আছে, শুধুমাত্র সোমবার যে বিশেষ সময়ে ভক্তরাই শুধুমাত্র এই মুকুট দেখার সুযোগ পান।ত্রিবাঙ্কেশ্বর মন্দিরের কাছে ব্রহ্মগিরি পর্বতকে শিবের রূপ বলে মনে করা হয়।

পুরান মতে দেবী অহিল্যার স্বামী ঋষি গৌতম প্রাচীনকালে ব্রহ্মগিরি পর্বতে বাস করতেন। এখানে উপস্থিত বাকিরা গৌতম ঋষির প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে, তাকে প্রতারিত করেছিল এবং তাকে গো-হত্যার জন্য অভিযুক্ত করেছিল। এই পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অন্যান্য ঋষিরা তাকে মা গঙ্গাকে এখানে নিয়ে আসতে বলেন। তারপরে শুরু হয় ঋষি গৌতম দ্বারা মারফত পার্থিব শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। ঋষির সৎভক্তি দেখে গৌরী এবং শংকর খুব খুশি হলেন এবং তাকে আসলেই দর্শন দিলেন। বর স্বরূপ ঋষি গৌতম চাইলেন যাতে মা গঙ্গা এই স্থানে আসেন। কিন্তু মা গঙ্গাও বললেন যে  মহাদেব থাকলে তবেই তিনি এই স্থানে আসবেন। মহাদেব এখানে উপবিষ্ট হন ত্র্যম্বকেশ্বর রূপে। পরে গঙ্গা নদী গোদাবরী নামে পরিচিতি লাভ করে। বৃহস্পতি সিংহ রাশিতে এলে এখানে মহা কুম্ভ যোগ হয়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...