জগন্নাথ মন্দিরের রত্নবেদীতে চার মূর্তি-বলভদ্র, সুভদ্রা, জগন্নাথ আর সুদর্শনের পুরাণ মাহাত্ম্য

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নবেদীতে আছে চার মূর্তি-বলভদ্র, সুভদ্রা, জগন্নাথ আর সুদর্শন। এই চারটি মূর্তির রূপ ও তার অর্থ নানাভাবে ব্যখ্যা করা হয়েছে পুরাণে। এঁরা যথাক্রমে বিরাট, সূত্রাত্মা, অন্তর্যামী ও শুদ্ধতার প্রতীক।

স্কন্দপুরাণ ও পঞ্চসখা যুগের দার্শনিকদের ব্যাখ্যায় মূর্তি চতুষ্টায় চারটি বেদময়। জগন্নাথ সামবেদ, বলরাম ঋকবেদ, সুভদ্রা যজুর্বেদ আর সুদর্শন অথর্ব বেদ। অর্থাৎ তাঁরা বেদময় পুরুষ।

IMG-20230822-WA0020

মূর্তি রহস্য সম্পর্কে শাস্ত্রকাররা বলেন শ্রী জগন্নাথ অব্যক্ত পুরুষ। তাঁর ব্যক্ত অবস্থার প্রকাশিত শক্তি হলেন সুভদ্রা। স্থূল জগৎরূপে প্রকাশিত বলরাম আর সূক্ষ জগতের অধীশ্বর শ্রী জগন্নাথ। এই সূক্ষ আর স্থূল জগতের সংযোগকারিণী সুভদ্রা।

সুভদ্রার গাত্রবর্ণ হলুদ। তিনি প্রকৃতি, শক্তি ঐশ্বর্যের প্রতীক। বলরাম শুভ্রবর্ণ। তিনি শুদ্ধ অনিরররণেয় আত্মা পুরুষ। আর শ্রীজগন্নাথের কৃষ্ণবর্ণে প্রকাশ পায় মহাবিশ্বের লৌকিক রূপ। তিনি গভীর রহস্যের আধার। তাই গাত্রবর্ণ কৃষ্ণ।

শ্রী জগন্নাথ দেব নিরাকার পরমব্রহ্মের প্রকাশিত রূপ। জগন্নাথ একাধারে পুরুষ ও প্রকৃতি। তিনিই ব্রহ্ম, তিনিই প্রকৃতি। জগন্নাথের হাত না থাকলেও তিনি সব কিছু গ্রহণ করে রয়েছেন। তাঁর পদ নেই তবু দূরগামী। চোখ না থাকলেও দেখতে কান। শ্রবণযন্ত্র না থাকলেও শুনতে পান। তিনি সব জানেন অথচ তাঁকে কেউ জানতে পারে না। তিনিই আদি। তিনিই অন্ত।

সব ইন্দ্রিয়যুক্ত হয়েও তিনি ইন্দ্রিয়হীন। শাস্ত্রবর্ণিত ‘অপাণিপাদ পুরুষ’ই শ্রীক্ষেত্রের রত্নবেদীতে অধিষ্ঠিত মূর্তিরূপ জগন্নাথ। তাঁর চোখ দুটি চন্দ্র-সূর্য। চোখে কোনও পাতা নেই। তিনি নিদ্রাহীন। সদা দেখছেন জগৎ সংসার। সমান্তরালভাবে প্রসাঋত বাহু জগৎসংসারের সবকিছুই তাঁর অনন্ত আলিঙ্গনে আবদধ। 

  • ট্যাগ

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...