নবরাত্রির পঞ্চম দিনে কেন দেবী দুর্গাকে স্কন্ধমাতা রুপে পুজো করা হয়?

মা দুর্গা এসে পড়েছেন মর্ত্যে। নবরাত্রি এসে গেল। নবরাত্রির নয় দিনের এই উৎসবে দেবী দুর্গার নয়টি রূপ উৎসর্গ করা হয়। সেই রুপগুলি হল- শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুশমণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী এবং সিদ্ধিদাত্রীকে ।

নবরাত্রির পঞ্চম দিন অনুযায়ী, মা স্কন্দমাতার পূজা করার নিয়ম রয়েছে। জানা গিয়েছে, দেবীকে খুশি করার জন্য প্রায় সবাই এই দিনে সাদা রঙের পোশাক পরেন। এই রঙ পড়ার কারণ হল বিশুদ্ধতা, শান্তি এবং ধ্যানের প্রতীক, তাই হিসেবে বিবেচিত।  

নবরাত্রির পঞ্চম দিন ভগবান কার্তিকের মা দেবী স্কন্দমাতাকে উৎসর্গ করা হয়। কার্তিকের আরেক নাম হল স্কন্দ এবং ‘মাতা’ মায়ের অর্থে ব্যবহৃত একটি শব্দটি। এই কারণেই তিনি ‘দেবী স্কন্দমাতা’ নামে পরিচিত।

শোনা যায় যে ভক্তরা যখন দেবীর পূজা করেন তখন মায়ের কোলে বসে থাকা ভগবান কার্তিকের আশীর্বাদও মেলে, তিনি দয়ার প্রতীক। বাংলায় যেমন দুর্গাকে গণেশজননী হিসেবে পূজো করার রেওয়াজ আছে, তেমনি পশ্চিম ভারতে দেবী দুর্গাকে কার্তিকের মা হিসেবে পূজোর রেওয়াজ চলে।

মা দূর্গার এই রূপ ভগবান স্কন্দ অর্থাৎ দেব সেনাপতি কার্তিকের মায়ের। এখানে মা দুর্গা এই রূপেই শিশু কাল থেকে কার্তিকের সঙ্গে থেকেছেন।

ত্রিনয়নী দেবী, চার হাতবিশিষ্টা, ডানদিকের উপরের হাতে ধরে আছেন শিশু কার্তিককে, প্রস্ফুটিত পদ্ম থাকে আর এক দক্ষিণ হস্তে। বাঁ দিকের একটি হাত বরাভয় দিচ্ছে, আর এক হাতে ধরে আছেন পদ্ম৷

এই রূপে দেবী দুর্গা সিংহ বাহনে বসে এবং সিনহটি বসে ফুটে থাকা কমলে। তিনি পূজিত হন নবরাত্রির পঞ্চমদিনে।

শোনা যায়, মা স্কন্দমাতা গৃহের যে কোনও রকম অশান্তি নাশ করেন।

হিন্দু পুরাণ অনুসারে, তারকাসুর দানব ভগবান ব্রহ্মাকে তীব্র তপস্যা এবং ভক্তিতে সন্তুষ্ট করেছিলেন। তিনি ভগবান ব্রহ্মাকে অমরত্বের আশীর্বাদ চেয়েছিলেন কিন্তু ব্রহ্মা তা দিতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু, সেই বর পরে তিনি পান। তবে, ভগবান শিবের পুত্র ছাড়া আর কেউ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না।

 ভগবান শিব কখনও বিয়ে করবেন না, এই ভেবে তারকাসুর সেই বর মাথা পেতে মেনে নিয়েছিলেন। এরপর মর্ত্যের মানুষের ওপর অত্যাচার করা শুরু করেন তিনি। তাঁর শক্তির ভয়ে দেবতারা ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীকে বিয়ে করতে বললেন। এরপরে তাঁদের সন্তান ভগবান কার্তিক বা স্কন্দকুমার তারকাসুরের অবসান ঘটান। দেবী স্কন্দমাতার গল্প হল, মা-সন্তানের সম্পর্কের প্রতীক।

নবরাত্রির পঞ্চম দিনে কিভাবে শুরু করবেন পুজো?

ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার বস্ত্র পরা উচিত। স্কন্দমাতার মূর্তিটি ঘরের ভিতরে পূজার স্থানে রাখুন এবং গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করুন। তারপরে, একটি কলস নিতে তাতে জল ও কিছু মুদ্রা রাখুন। দেবীর আরাধনা করুন এবং তাঁকে কলার প্রসাদ সহ ছ’টি এলাচও অর্পণ করবেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...