সদস্য সংখ্যা বাড়ছে 'উইনার্স'-এর

শুক্রবার রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় টহল দিতে বেরিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের বিশেষ মহিলা বাহিনী 'উইনার্স'। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে তাঁদের স্বাভাবিকভাবেই চোখে পড়ল নিরাপত্তাহীনতা। যথেষ্ট আতঙ্কিত উইনার্স বাহিনী। প্রশ্ন উঠেছে এভাবেই কি চলে রাতের কলকাতা?

                রবিবার ভর দুপুরে যেভাবে ভিক্টোরিয়া'র সামনে থেকে ছ'জন আটক হয়েছে, তারপর থেকে নিরাপত্তার প্রশ্ন আরও জোরদার হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। দ্রুত পরিস্থিতি যাতে বদলানো যায় এবং মহিলাদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তাই উইনার্স-দের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর দিকে জোর দিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। আসন্ন বড়দিনের আগেই উইনার্স-এ ১০ জন মহিলার নিযুক্তির সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা।

                  উল্লেখ্য, গত বছর জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুধুমাত্র মহিলাদের নিয়ে বিশেষ বাইকবাহিনী তৈরির পরিকল্পনা করে কলকাতা পুলিশ। গত কয়েক বছরে শহরের যে সব এলাকা বা রাস্তা থেকে মহিলাদের উত্যক্ত করার অথবা যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ সবচেয়ে বেশি এসেছে, সেখানে নিয়মিত নজরদারি চালানোই এই বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল। পাশাপাশি যানবাহন পরিচালনেও উইনার্স দল সাহায্য করবে বলে ঠিক হয়েছিল। বর্তমানে উইনার্স-এ ২৩ জন মহিলা কনস্টেবলের পাশাপাশি রয়েছেন চার জন মহিলা অফিসার।

তাঁদের সঙ্গে আরও দশ জন মহিলা কনস্টেবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একজন পুলিশ কর্তার বক্তব্য অনুযায়ী এই মূহুর্তে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে নতুন মেয়েদের প্রশিক্ষণ চলছে। বাহিনীতে থাকা কয়েকজনই তাঁদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তবে সব কিছু শেখা হয়ে গেলেও এখনও মোটর বাইক চালানো এবং পথ বিধি সংক্রান্ত কিছু বিষয় তাদের শেখা বাকি। সম্পূর্ণ শিক্ষা হয়ে গেলে কাজে যোগ দেবেন নতুন মেয়েরা বলে জানা গেছে পুলিশ সূত্র থেকে। উইনার্স হিসেবে মোট ৩৭ জন কাজ করবে। এই বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত কলকাতা পুলিশের একজন অফিসার জানান, প্রথম যে দিন বাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত হয়, সেই সময় মাত্র তিন জনকে পাওয়া গিয়েছিল যাঁরা মোটরবাইক চালাতে পারেন এমন মহিলাকে। পরবর্তীতে যাঁদের বাছাই করা হয়, তাঁরা কেউ মার্শাল আর্টস, কেউ কিক বক্সিংয়ে পারদর্শী। কাজেই কাজের প্রয়োজনে যে ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, তা সম্পূর্ণ হলেই তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন উইনার্স হিসেবে।

                    কাজ শুরু করার পর এই উইনার্স বাহিনী যথেষ্ট বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। উইনার্স-এরই এক সদস্য জানান, এমনও হয়েছে, কাউকে ধরতে গিয়ে অভিযুক্তেরই হামলায় বাহিনীর কারও হাতে বা গায়ে লেগেছে। একটি হাস্যকর ঘটনারও উল্লেখ করেন তিনি। একজন যুবক ওই বাহিনীরই একটি মেয়েকে টাকা নিয়ে পার্কে গিয়ে সঙ্গ দেওয়ার জন্য বলেছিল। তবে এটাও ঠিক, সকলে মিলে বাইক নিয়ে বেরোলে সব ভয় কেটে যায়-তাও স্বীকার করলেন ওই সদস্য। শুক্রবার রাত থেকে রবিবার অব্দি মোট ২০ জন আটক হয়েছে এখনো পর্যন্ত উইনার্স বাহিনীর হাতে। সামনেই আসছে বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষ। তার আগে যাতে উইনার্স-এর শক্তি বাড়ানো যায়, সেই কারণেই পুলিশের সিদ্ধান্ত আরও 'উইনার্স' বাড়ানোর।

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...