চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার জলের তলা থেকে উঠে আসেন জলেশ্বর শিব

জলের তলায় বাস করেন দেবতা, তাই তিনি জলেশ্বর। বছরে একবার মাত্র জলতল থেকে মন্দিরে আসেন তিনি। বছরবভর সেই আগমনের জন্যই অপেক্ষা করে থাকে ভক্তরা। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার জলেশ্বর শিব সারা বছর থাকে জলের নীচে। একবারই মাত্র জল থেকে স্থলে আসেন তিনি। প্রতি বছর চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার।  

জলের নিচে ভোলা মহেশ্বরের বাসের করার এই অঞ্চলের নাম জলেশ্বর। সেন বংশের রাজত্বকালে দ্বাদশ শতকের শেষ দিকে শিব পুজোর প্রচলন শুরু হয়। তখন টিনের ছাউনির মাটির মন্দিরে পূজিত হতেন দেবতা। গোবরডাঙার জমিদার রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় শিব মন্দিরের জন্য ৬০ বিঘে জমি দান করেছিলেন।

প্রায় ৮৫০ বছরের প্রাচীন জলেশ্বর শিব মন্দিরের পাশেই রয়েছে চার একর ৪০ শতক জমির উপরে একটি পুকুর। এই জলাশয়ের স্থানীয় পরিচিতি ‘শিব পুকুর’ । এই পুকুরেই জলের তলায় রাখা থাকে বিগ্রহ। চড়কে যাঁরা সন্ন্যাসী হন, তাঁরা প্রতি বছর চৈত্র মাসের তৃতীয় সোমবার শিব পুকুর থেকে বিগ্রহ তুলে আনেন। তার পরদিন ওই বিগ্রহ নিয়ে সন্ন্যাসীরা পায়ে হেঁটে হালিশহরে গিয়ে বিগ্রহকে গঙ্গায় স্নান করান। ফিরে স্থানীয় আটটি গ্রামের ভক্তদের বাড়িতে পূজিত হন দেবতা। ১ বৈশাখ বিগ্রহকে ফের শিব পুকুরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

মূল শিব মন্দির ছাড়াও এখানে রয়েছে শিবের প্রতীক্ষা মন্দির ও কালী মন্দির। বছরে তিনবার মেলা বসে। জলেশ্বর দেবতাকে অত্যন্ত জাগ্রত মানে মানুষ। তাই চৈত্রমাস ধরে দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসে গাইঘাটার জলশ্বরে। বসে চড়কের মেলা। এই সময় ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...