রোগা, রোদে পোড়া শরীর। স্কুল ইউনিফর্ম ছাপিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে অনটনের ছাপ, কিন্তু তার চেয়েও বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্বপ্ন দেখা চোখগুলো। আগুনে জেদের খর তাপ নয়, বরং লড়াই করে একার পর এক বাধা ডিঙানোর আত্মবিশ্বাস। তার জোরেই বর্ধমানের বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা আদক জায়গা করে নিয়েছে ২০২২ উচ্চমাধ্যমিক মেধা তালিকার অষ্টম স্থানে। উচ্চমাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১।
দিনে সময় পেলেই বাবা মার সঙ্গে ক্ষেতে কাজ। আর বাকিটা সময়টা বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকা। এভাবেই প্রস্তত হয়ে উঠেছিল প্রিয়াঙ্কা। করোনা, অনলাইনে পড়াশোনা, ক্লাস এসব ছাপিয়েও তার প্রধান প্রতিপক্ষ ছিল অনটন।
কিন্তু বাধা নেই স্বপ্ন দেখায়। দুঃখী মানুষের বড় সম্বল স্বপ্ন আর জেদ। সেই হাতিয়ার সম্বল করেই এগিয়েছে সে। পাশে পেয়েছে বাবা মাকে।
বাবা বিমল আদক, মা ঝুমা আদক। দুজনেই ক্ষেতমজুরের কাজ করেন। বাবা বিমল আদকের স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা। কিন্তু আর্থিক সংকট, পরিস্থিতির চাপে সেই স্বপ্ন হারিয়ে যায়।ছেলেমেয়েদের চোখ হারানো স্বপ্নের বীজ বুনে দিতে চেয়েছেন বারবার। তাঁর কন্যা হতাশ করেনি তাঁকে।মেয়ের সাফল্য জল এনেছে বাবা মায়ের চোখে। প্রচন্ড খুশি স্কুল আর বর্ধমানের বংপুর চাষীমানা এলাকার মানুষজন।মাধ্যমিকে প্রিয়াঙ্কার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৫৯৫। প্ৰিয় বিষয় ভূগোল। ভূগোল নিয়েই উচ্চশিক্ষায় এগোতে চায় সে। হতে চায় শিক্ষিকা।তার উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার বহনে পাশে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।