ভারতীয় ছবিতে ‘শ্রী’ মানে শুধুই ‘শ্রীদেবী’। শ্রী আম্মা ইয়াঙ্গের আয়াপ্পন তাঁর আসল নাম। কিন্তু সেই নামের আদ্যভাগের শ্রী-ই ভক্তদের ‘The Queen of Hearts ‘ শ্রীদেবী।
পুরুষ প্রধান ভারতীয় ছবির দুনিয়ায় প্রতিভার জোরে গড়েছেন নিজস্ব সাম্রাজ্য। তিনি প্রথম ভারতীয় মহিলা সুপারস্টার। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ২০১৩ সালে সিএনএন-আইবিএনের সার্ভেতে তিনি '১০০ বছরে ভারতের সেরা অভিনেত্রী' হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৬৭ সালে তামিল ছবি কানদান কারুনাই দিয়ে তিনি পা রাখেন অভিনয় দুনিয়ায়। বয়স তখন সবে চার। ষাটের দশক জুড়ে এবং সত্তরের দশকের মাঝখান পর্যন্ত শ্রীদেবী তামিল চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। তখনই তাঁর ‘শ্রীদেবী’ নামে পরিচিতির শুরু।
১৯৭২ সালে ‘রানী মেরা নাম’ ছবি দিয়ে শ্রীদেবীর হিন্দি চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয়।
অসংখ্য ছবিতে গ্ল্যামার এবং অভিনয় দক্ষতায় নজর কেড়েছেন তিনি। পাঁচ দশকের কেরিয়ারে ৩০০’র বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবির অসাধারণ পারফরম্যান্স-এর কারণে তাঁর নামই হয়ে যায় ‘হাওয়া হাওয়াই’। এছাড়া ‘নাগিন’, চাঁদনী, চালবাজ, খুদা গাওয়া, লমহে, জুদাই এবং সাম্প্রতিকতম ছবি ‘মম’ আর ‘ইংলিশ-ভিংলিশ’ তাঁর সেরা কাজ। হিন্দি, তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কন্নড় ভাষার ছবিতে কাজ করেছেন।
১৯৮৩ সালে সাদমা চলচ্চিত্রটি দিয়ে শ্রীদেবী সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেন।শ্রীদেবী এবং কমল হাসন অভিনীত এই ছবিটি বলিউডে ক্ল্যাসিক ছবির তকমা পায়।
জীবনের দবিতীয় পর্বের কেরিয়ারে অভিনেত্রী হিসেবে তিনি যেন আরও ধারালো হয়ে উঠেছিলেন। কমার্শিয়াল আর আর্টফিল্ম দু’ক্ষেত্রেই সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছিলেন।
স্কুল যাওয়ার সুযোগ তেমন পাননি জীবনে। অধরা ছিল খেলার মাঠ। যে বয়সে স্কুল আর খেলার মাঠে বেড়ে ওঠে শিশু সেই বয়স থেকেই শুটিং ফ্লোর হয়ে উঠেছিল তাঁর ঘরবারি খেলার মাঠ। তবে আফসোস ছিল না জীবনে। ঘর-বার আর লাইমলাইটের যে জীবন তিনি অর্জন করে ছিলেন সেই জীবনেই চেষ্টা করেছিলেন খুশি থাকার।
শ্রীদেবী তামিলনাড়ুতে ১৯৬৩ সালের ১৩ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে আকস্মিক প্রয়াণ ঘটে অভিনেত্রীর।