কালী কথা: বাগবাজার সর্বমঙ্গলা কালী মন্দির, যে মন্দিরে নিয়মিত যেতেন রামকৃষ্ণ

মেদিনীপুরের গড়বেতা, বর্ধমানের মতো খাস কলকাতার বুকেও রয়েছে এক সর্বমঙ্গলা মন্দির। উত্তর কলকাতার প্রাচীনতম মন্দিরগুলির অন্যতম এটি। মন্দির চত্বরে মূল মন্দির দেবী সর্বমঙ্গলা ছাড়াও রয়েছে তিনটি শিব মন্দির। লোকমুখে শোনা যায়, এই মন্দিরে দেবী নিরন্তর অবস্থান করেন। জনশ্রুতি রয়েছে, বাগবাজারে থাকাকালীন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব দেবীকে প্রণাম করে স্নান করতে যেতেন। কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে জগন্নাথ মন্দির। 

উত্তর কলকাতার জনবহুল ও প্রাচীন জনপদ বাগবাজার চত্বরে দাঁড়িয়ে রয়েছে শ্রীশ্রী সর্বমঙ্গলা কালী মন্দির। রবীন্দ্র সরণী ও বাগবাজার স্ট্রিটের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই মন্দির, ৬১৮ রবীন্দ্র সরণী।মন্দিরের বয়স আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ বছর। দেবী আদপে দক্ষিণা কালী। অন্য কালী মূর্তির তুলনায় দেবী বিগ্রহের হাত এখানে অনেক বড়। দেবী কালিকার মূর্তি কষ্টিপাথর নির্মিত।

 

কথিত আছে, তপস্বী কালীবর নামের জনৈক এক সাধক হিমালয়ের কোনও এক গুহায় উপাসনা করতেন। একদিন তিনি স্বপ্নাদেশ পান। দেবী কালী তাঁকে বলেন, গঙ্গার তীরের এক জঙ্গলে পড়ে রয়েছেন দেবী। তাঁকে পুজোর আদেশ দেন কালী। কালীবর চলে আসেন বাগবাজারের গঙ্গাপাড়ে। এক হোগলা বনের মধ্যে তিনি দেবীর উপাসনা আরম্ভ করেন। ভক্তের পুজোয় তুষ্ট হন দেবী। 

 

শোনা যায়, কিছুদিন কালীবরের হাতে দেবী পুজো পেলেও, দেবীর পুজোর ভার বর্তায় এক সন্ন্যাসী কাপালিকের উপর।গোলপাতার ছাউনির মন্দিরে গড়ে তিনি দেবীর আরাধনা শুরু করেন। জঙ্গলে ঘেরা মন্দিরে এরপর দেবী পুজো পেতেন ডাকাতদের হাতে। এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে রঘু ডাকাতের কাহিনিও। 

 

দেবী স্বর্ণালঙ্কারা। দেবী মূর্তির সমগ্র দেহ অসংখ্য স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিত, মাথায় উজ্জ্বল সোনার মুকুট। দেবী চতুর্ভুজা। মায়ের ডান দিকের দুই হাত অভয় ও বর মুদ্রায়। মায়ের বাম দিকের দুই হাতে থাকে খর্গ ও নরমুণ্ড। মায়ের পায়ে শায়িত মহাকাল। দেবী দক্ষিণা কালী রূপে পূজিতা। মন্দিরে নিত্যপুজো হয়। দীপান্বিতায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে দেবীর পুজো হয়।

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...