একসময় তাঁদের সিনেমা মানেই সিনেমা হল পুরো হাউসফুল। টলিউডের অন্যতম জুটি হল প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণা। সিনেমার পর্দায় এই জুটি এলেই মন জয় করে সকল দর্শকদের। দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে চুটিয়ে কাজ করে এসেছেন তাঁরা। এখনও করছে। সম্প্রতি বড়পর্দায় নিজেদের ৫০তম জুটি ইতিমধ্যেই বেঁধে ফেলেছেন দুজনে।
শোনা যায় যে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা শ্যুটিং নিয়ে নানানরকম টালবাহানা করতেই থাকেন। তিনি নাকি পাঁচ পরিচালককে একই ডেট দিয়ে রেখেছেন, এমনটাও শোনা যায়। এই সমস্ত কথা নিজেই জানালেন স্বয়ং প্রসেনজিৎ।
এক জনপ্রিয় টেলিভিশন শোয়ে এসেছিলেন এই জুটি। সেখানেই ঋতুপর্ণার সব পর্দা ফাঁস।
সেখানে প্রসেনজিৎ বলেছেন ‘ঋতু (ঋতুপর্ণা)এবং তিনি এক সময় প্রচুর ছবিতে কাজ করছেন। কারও ছবি একদিন, কারও দুদিন, কারও পাঁচদিন কাজ বাকি আছে। একদিন তিনি টেকনিশিয়ান স্টুডিও এক বা দুইয়ে বসে আছেন। একজন পরিচালক এলেন। সুজিত গুহ। পরণে হলুদ শার্ট আর হাতে একটা ব্যাগ। প্রসেনজিৎ-কে সবসময় তুইতোকারি করতেন। ইনি ছিলেন তাঁর ‘অমর সঙ্গী’ ছবির পরিচালক।
তাঁর কাছে এসে পরিচালক বললেন, “এই শোন না, আমাদের তিনদিনের শ্যুটিং বাকি আছে। জুনের ৯-১৪, ঋতু এই ডেটটা দিয়ে দিয়েছে। তুই ম্যানেজ কর। তাহলে সিনেমাটা হয়ে যাবে। বিকেলের দিকে আয় একবার।”
এরপর প্রসেনজিৎ বলেন যে এরপর সেদিন দুপুরের দিকে অনুপ সেনগুপ্ত এলেন। তিনি পরণে সাদা জামা, সাদা প্যান্ট, সাদা জুতো। এসে বললেন, “এই শোন বুম্বা। দুদিন হলে ওই গানের শ্যুটিংটা শেষ হয়ে যাবে। তাহলে আমি সেন্সরে চলে যেতে পারি। ওই ৯-১৪ জুন ডেট দিয়েছে ঋতু। তুই একটু অ্যাডজাস্ট করে ডেটটা দিয়ে দে। তাহলে আমি কাজটা শেষ করে দিতে পারব।“
তবে এখানেই শেষ নয়, শোয়ে ঋতুপর্ণার খামখেয়ালিপনার আরও এক উদাহরণ দিয়েছেন প্রসেনজিৎ। তিনি বলেছেন যে নারায়ণদা বলে বাংলাদেশের খুব বিখ্যাত ও সিনিয়র এক পরিচালক ছিলেন। উনি তাঁকে ‘সাহেব’ বলে ডাকতেন। বিকেলের দিকে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে এলেন। তিনি একজন খুব সিনিয়র ব্যক্তি।
এসে বললেন, “মেমসাহেব তো আমাকে ডেট দিয়ে দিয়েছে। তাহলে আমার যে তিন-চারদিনের কাজটা বাকি আছে করে ফেলি। আপনি যদি অ্যাডজাস্ট করে নেন। আমি বললাম, কী ডেট দিয়েছে বলুন তো। বললেন, ওই তো জুন মাসের ৯-১৪।”
মজার ছলে প্রসেনজিৎ বললেন যে এখানেই তিনি শেষ করেননি। শেষ হল স্বপনদার গল্প বলার পর। সেই সময় স্বপনদার সাথে ১১টা ছবি হয়ে গিয়েছে। তিনিও ওইদিনি এসে বললেন,“শোন, আমাকে তো নায়িকা ডেট দিয়ে দিয়েছে। আমি বললাম, কী ডেট বলুন তো, জুনের ৯-১৪? অবাক হয়ে আমাকে বললেন, তুই কী করে জানলি? আমি বললাম, একটাই ডেট পাঁচজন পরিচালককে দিয়েছে। আমি কী করে অ্যাডজাস্ট করব!”
এই গল্পগুলো শুনে ঋতুপর্ণা নিজের হাসি আর চেপে রাখতে পারেন নি। প্রসেনজিৎ-এর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি হেসেই যাচ্ছেন। তাঁদের হাসির সাথে হাসছে শোয়ের সমস্ত দর্শক।