জেনে নিন রাস পূর্ণিমার দিনক্ষণ

শারদোৎসব, দীপাবলি, ভাইফোঁটার পর্ব শেষ হওয়ার পর অপেক্ষা শুরু রাস উৎসবের। বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মধ্যে এই উৎসব অতি গুরুত্বপূর্ণ। গোটা দেশেই কৃষ্ণভাবাপন্ন মানুষরা উদযাপন করেন এই উৎসব।

এই বছর রাস পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর।  পূর্ণিমার সময় - ২৬ নভেম্বর (৯ অগ্রহায়ণ) ঘ ৩/১৩/১৯  থেকে ২৭ নভেম্বর (১০ অগ্রহায়ণ), সোমবার ঘ ২/১৫/৫৯ পর্যন্ত থাকবে পূর্ণিমা তিথি। 

* অমৃতকাল – দিবা ঘ ৭।৩৮ মধ্যে ও ৯।৬ গতে ১১।১২ মধ্যে এবং রাত্রি ঘ ৭।৩৫ গতে ১১।৭ মধ্যে ও ২।৪২ গতে ৩।৩৫ মধ্যে।

কীভাবে শুরু হয়েছিল রাস উৎসব?

রাস' এসেছে 'রস; থেকে। 'রস' মানে আনন্দ, দিব্য অনুভূতি, দিব্য প্রেম। 'লীলা' অর্থ নৃত্য। অনেকে মনে করেন, ঈশ্বরের সঙ্গে আত্মার মহামিলনই রাস। পুরাণে শারদ রাস ও বসন্ত রাসের উল্লেখ পাওয়া যায়। যেটি সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব। শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। বাংলায় যুগ যুগ ধরে শ্রীচৈতন্যদেবের রাস উৎসব পালনের কথা শোনা যায়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং গিরিশচন্দ্রের পরবর্তী সময়কালে বাংলায় রাস উৎসবের বহুল প্রচলন ঘটে। নবদ্বীপে শাক্তরাসের প্রবর্তক হিসেবে নদিয়া-রাজ মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নাম উল্লেখ করা হয়।

পুরাণ কাহিনি অনুসারে, ব্রজধামে তাঁর লীলা চলাকালীন  বস্ত্রহরণের দিন কৃষ্ণ গোপিনীদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে তিনি তাঁদের সঙ্গে রাসলীলা করবেন। কৃষ্ণের মধুর বাঁশির শব্দ শুনে মুগ্ধ গোপিনীরা নিজেদের কর্তব্য বিসর্জন দিয়ে সংসারের মোহ ত্যাগ করে বৃন্দাবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরা নিজেদেরকে শ্রীকৃষ্ণের চরণে সমর্পণ করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের গৃহে ফিরে যেতে বললেও তাঁরা ফিরে যাননি। তাঁদের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে এরপর শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের অন্তর পরিষ্কার করেন। যতজন গোপিনী, ততজন কৃষ্ণ হয়ে গোপিনীদের ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। যার মাধ্যমে গোপিনীরা জাগতিক ক্লেশমুক্ত হন। এভাবেই রাস উৎসব শুরু হয়েছিল।

জনশ্রুতি প্রচলিত আছে যে, চৈতন্যদেব রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন নবদ্বীপে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...