নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে টিউশন পড়িয়ে WBCS-এ র‍্যাঙ্ক দৌলতাবাদের মেয়ে!

প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় (WBCS) সাফল্য পেল মুর্শিদাবাদ জেলার দৌলতাবাদের রুকাইয়া সুলতানা।

3406859_HYP_0_IMG-20230828-WA0089_11zon

মুর্শিদাবাদ জেলার দৌলতাবাদের রুহিয়া গ্ৰামের বাসিন্দা রুকাইয়া। অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছে এই কন্যা। ছোট থেকেই ছিল মেধাবী। তাঁর বাবা রুহুল হোসেন,পেশায় কৃষক ও মা, আরজুমা সুলতানা, পেশায় পার্শ্ব শিক্ষিকা। রুকাইয়ার ইচ্ছা ছিল WBCS আধিকারিক হওয়ার। অভাবের জন্যে জীবনে সে অনেক বাধা পায়। নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য টিউশন পড়াতেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই মনের জোড় এবং অদম্য ইচ্ছাকে কাজে লাগিয়ে সেই বাধাকে অতিক্রম করে প্রথমবারেই ২৭ তম স্থান ছিনিয়ে এনেছেন মুর্শিদাবাদের রুকাইয়া।পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় মেরিটলিস্টে মোট ৮৪ জনের পরিক্ষা হয়। তার মধ্যে ২৭তম ব়্যাঙ্ক করে উত্তীর্ণ হয়ে নজর কেড়েছেন রুকিইয়া।

rukaiya-1693299992

রুকাইয়া সুলতানা এক সংবাদ মাধ্যমে জানান, “আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা মা, আমার পরিবারের সদস্যদের অবদান সবথেকে বেশি। এছাড়াও যে কোচিং-এ আমি পাঁচ মাস পড়েছিলাম তাঁরাও আমাকে গাইড করেছেন। পরে করোনার জন্য ওই কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যাবার পর আমি বাড়ি থেকেই পড়াশুনা চালিয়ে যাই এবং প্রিলি ও মেন পরীক্ষায় সাফল্য লাভ করি। আমার মাস্টারমশাইদের অবদানও কম নয়। তাছাড়া আমার স্বামী যেভাবে সবসময় আমার পাশে থেকেছেন তা অবশ্যই বলার মত।“  

তিনি আরও জানিয়েছেন, “আগামী দিনে উচ্চ পদস্থ আধিকারিক হয়ে জনগণের জন্য কাজ করতে চাই। একটানা পরিশ্রম করলে WBCS সাফল্য আসবেই। আমিও পেরেছি, যারা চেষ্টা করবে তারাও নিশ্চয়ই সাফল্য পাবে। তাই নিজের তাগিদ ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে, পাশাপাশি দৈনন্দিন সঠিকভাবে পড়াশুনো করলেই সাফল্য আসবে।”

রুকাইয়ার সাফল্যে তাঁর সকল পরিবার খুবই খুশি এবং গর্বিত। গর্বিত তাঁর গোটা গ্রামের লোকেরা। দৌলতাবাদ থানার ওসি দেবাশীষ ঘোষ রুকাইয়া সুলতানার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। দৌলতাবাদ থানা এলাকার বুদ্ধিজীবী মহল-সহ এলাকাবাসীরা সকলেই তাঁকে শুভেচ্ছা বার্তা ভরিয়ে দেন।

মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা এক সংবাদ মাধ্যমে জানান, “মেয়ের সাফল্যে আমি গর্বিত। অনেক অভাব অসুবিধার মধ্যে ও নিজের পড়াশুনো চালিয়ে গেছে। আজ ও যে সাফল্য পেয়েছে এরপর যেন মানুষের জন্য কাজ করতে পারে সেটাই আমি চাই”। রুকাইয়ার মা জানিয়েছেন, “এখন এসএসসি পরীক্ষা নেই বললেই হয়। তাই ও ডব্লুবিসিএস-এর জন্য পড়াশুনো করতে শুরু করে। তাঁর পিসি মানোয়ারা খাতুন বলেন, “ও মূলত ওর নিজের চেস্টাতে এই সাফল্য পেয়েছে। হয়তো আমরা ওকে সাহায্য করেছি, ওর পাশে দাঁড়িয়েছি, ওকে গাইড করেছি। কিন্তু এই সাফল্যের পুরো কৃতিত্বই ওর”।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...