‘উনি মাথায় হাত দিলে মনে হতো শান্তি পেতাম’, মিঠুন চক্রবর্তীর মায়ের প্রয়াণে স্মৃতিচারণায় শিলাজিৎ

বৃহস্পতিবার,৬ জুলাই, ৯৫ বছর বয়সে মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মিঠুন চক্রবর্তীর মা শান্তিরানি চক্রবর্তী। কলকাতার জোড়াবাগানের বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন শান্তিরানি দেবী। এখন তিনি তাঁর ছেলের সঙ্গে থাকতেন মুম্বইয়ে। তাঁর প্রয়াণে অভিনেতা মিঠুনের কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। খবর নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর আগে সংবাদ মাধ্যমকে মিঠুনের ছোট ছেলে নমশি জানিয়েছেন, “ঠাকুমা আর নেই।”

এই মৃত্যুর খবর পেয়ে সোশ্য়াল মিডিয়ায় মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর মায়ের একটা পুরনো ছবি শেয়ার করে স্মৃতিচারণা করলেন সংগীতশিল্পী শিলাজিৎ মজুমদার।

শিলাজিৎ লিখেছেন, ”ছোটবেলায় দুজন কে ভীষণ ভয় পেতাম। এক ছিল আমার সেজো মামিমা ,ডাকলেই হিম হয়ে যেত হাড়।আর একজন শান্তি দিদা ,মা ডাকতো শান্তি মাসি বলে আমিও ডেকে ফেলতাম মাঝে মধ্যে। দিদার চোখের দিকে তাকালেই কিরকম একটা হতো।ওনার ঢলঢলে চোখে একটা সম্মোহনী দৃষ্টি ছিল।মা তো বদমায়েশি কিছু করলেই ভয় দেখাতো শান্তি দিদা কে বলে দেবো।এই দিদা রত্নগর্ভা,খুবই কষ্টে মানুষ করেছিলেন তার তিন মেয়ে আর এক ছেলে কে।ছেলে বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার পর তিনি আমাদের পাড়ার লোক বলেই অহঙ্কারে ফেটে পড়তাম আমরা।কিন্তু শান্তি দিদা বদলাননি ,ছেলে বিশ্ব বিখ্যাত হওয়ার পর ও কোনোদিন অনেক দেখে বোঝা যায় নি উনি সুপারস্টার মিঠুন এর মা।”

তিনি আরও লিখেছেন, “আমার ছোটো বেলার ভালো লাগার চরিত্র দের মধ্যে উনি ছিলেন একজন। ভয় পেতাম শান্তি দিদাকে কিন্তু ভালো বাসতেন আমাদের। আমাকে বলে নয় সবাই কে। ওনার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এরকম কেউ ওনার পরিচিত ছিল বলে আমি জানিনা। ওনার নাম শুধু শান্তি ছিল না উনি মাথায় হাত দিলে মনে হতো শান্তি পেতাম।একটু আগে মায়ের থেকে খবর পেলাম।শান্তি দিদা চলে গেলো।মায়ের যথারীতি মন টা ভালো নেই। পুরনো অ্যালবাম থেকে এই ছবি টা মা পাঠালো আমাকে।দেখা হতো না কিন্তু মনে থাকতেন, খবর নিতাম। মন টা খারাপ হয়ে গেলো। পৃথিবী একজন মা কে হারালো। এরকম স্নেহময়ী নিরহংকারী মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। প্রণাম।”

মিঠুন চক্রবর্তীর মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে টুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, ‘‘মাতৃবিয়োগের জন্য মিঠুন চক্রবর্তীকে জানাই আন্তরিক সমবেদনা। আশা করি, মিঠুনদা ও তাঁর পরিবার এই গভীর শোক সামলে উঠবেন।’’

অনেকেই তাঁর এই পোস্টে কমেন্ট করেছেন। এক ব্যক্তি লেখেন, “ভালো মানুষের এ পৃথিবীতে খুবই অভাব! তার উপর চলে যাওয়া! দাদার সাথে সাথে অনেকেই অভিভাবক হারাল!” অন্য একজন লেখে,” 'মা পাঠাল এবং দেখা হতো না। এই দুটি শব্দ সমষ্টি জীবনকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, মৃত্যু কত আপন!”

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...