ডাস্টবিনে ফেলে যাওয়া শিশুকন্যাকে দত্তক নিতে রাত জেগেছিলেন সুপারস্টার মিঠুন, সঙ্গী স্ত্রী যোগিতা

সময়টা নব্বইয়ের দশক। কলকাতায় তখনও খুঁজলে পাওয়া যাবে সাদা-কালো টেলিভিশন সেট। ইন্টারনেট দূরের কথা স্যাটেলাইট চ্যানেল সবে চিনতে শিখেছি বাঙালি। বাড়ির ছাদে ডিশ অ্যান্টেনা দেখলে হাঁ করিয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। মিডিয়ায় রমরমা দূরস্থ। তবু একদিন বেশ শোরগোল পড়ে গেল শহর জুড়ে।

IMG-20230713-WA0020

ডাস্ট বিনের ধার থেকে উদ্ধার হয়েছে এক সদ্যজাত কন্যা। মাঝরাতে ফেলে দিয়ে গিয়েছে তাকে কে বা কারা। কান্নার আওয়াজ পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় মানুষ। তাঁদের মধ্যে এক সহৃদয় মানুষ মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যায়। এগিয়ে আসে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।  তবে এহেন অমানবিক ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় শহর জুড়ে। প্রাণে বাঁচলেও শেষ পর্যন্ত কী হবে সেই রুগ্ন শিশুর ভবিষ্যৎ?

কলকাতার খবর এসে পৌঁছয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর কানে।  তিন পুত্রের পিতা মিঠুন  থাকতে না পেরে সে দিনই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। মিঠুন  চক্রবর্তী এবং তাঁর স্ত্রী যোগিতা বালী দত্তক নিতে চান কন্যাটিকে। 

এক মুহূর্ত দেরী না করে দিনের দিনই কলকাতা উড়ে এসেছিলেন তাঁরা। শোনা যায়, শীর্ণকায়, রুগ্ন ওই শিশুটিকে সারা রাত কোলে নিয়ে আইনি সমস্যা মিটিয়েছিলেন দু’জন।

IMG-20230713-WA0023

আদর আর যত্নে কন্যাটিকে বাড়ি নিয়ে আসেন তাঁরা। ছোট্ট বোনকে সাদর অভ্যর্থনা জানায় তাঁর পুত্ররা মহাক্ষয়, নামশি ও উস্মে। তাঁরা মেয়ের  নাম রাখেন ‘দিশানী’। আজ সেই মেয়েই ইন্সটাগ্রামের হার্টথ্রব ‘দিশানী চক্রবর্তী’। ইনস্টাগ্রামে তাঁর গ্ল্যামারাস লুকের জন্য ফ্যান-ফলোয়ার্সও কম নয়।

সিনেমা নিয়ে দিশানীর যথেষ্ট আগ্রহ আছে। মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার লাইম লাইট থেকে অনেক দূরে থাকলেও এখন তাঁকে মাঝে মাঝে দেখা যায়। দাদা উস্মে চক্রবর্তীর শর্ট ফিল্ম  ‘হোলি স্মোক’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। বলিউডে পা রাখার পরিকল্পনা আছে।  

মুম্বইতে বড় হয়েছেন মিঠুন কন্যা। নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি থেকে অভিনয় নিয়ে নিজের পড়াশোনা শেষ করেন। বর্তমানেও সেখানেই থাকেন দিশানী। স্বপ্ন দেখেন বাবার মতো অভিনেতা হবেন।

‘কলকাতার ছেলে’ সুপারস্টার মিঠুনের কন্যা ‘কলকাতার মেয়ে’- এই আবেগে দিশানীর প্রতি কলকাতাবাসীর আজও আগ্রহ কম নয়। তাই সে কেমন আছে- এই শহর তা জানতে চায় বারবার। ডাস্টবিনের পাশে পরিত্যক্ত নবজাতক আজ প্রাসাদ-নন্দিনী এ যেন আজও কলকাতার কাছে এক সত্যি রূপকথার গল্প। পুত্র-কন্যা নিয়ে মিঠুনের সংসার। কোনও দিন পুত্রদের থেকে কন্যাকে আলাদা করে দেখেননি। অত্যন্ত আদরে বড় করেছেন কন্যাকে। কন্যার প্রতি পিতার স্নেহ মুহূর্ত ধরা পড়েছে মিডিয়ার লেন্সেও।   

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...