হাসিতেই কমান নানা রোগ

বর্তমান যুগে প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে মনের সুখের হাসিটা কেমন যেন মলিন হয়ে যাচ্ছে সকলের। ধীরে ধীরে হাসতেই ভুলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। একে তো কাজের চাপ তার উপর চিন্তা আর দুশ্চিন্তা। এইসবের ফাঁদে পড়ে কান্না-হাসির জীবন বদলে যাচ্ছে শুধুই ডিপ্রেশনে। কিন্তু হাসলে কতটা সুস্থ থাকা যায় তা চিকিৎসকেরা বারবার সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। হাসলে যে শুধু মন ভালো থাকে তা কিন্তু নয়। হাসার ফলে মনের সাথে সাথে শরীরও খুব ভালো থাকে। চলুন সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক হাসি আমাদের কী কী উপকার করে.................

১) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা- গবেষণায় দেখা গেছে, হাসলে শরীরের রক্তপ্রবাহ আগের থেকে কিছু মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। হাসলে রক্তনালিকা প্রসারিত হয়ে থাকে। শিরা, ধমনী প্রভৃতি প্রসারিত হওয়ার ফলে রক্তের চাপ কম থাকে। তাই চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র ওষুধ হলো হাসি। হাসলে যেমন মন ভালো থাকে সেরকম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাড়িতে কেউ উচ্চ রক্তচাপের রোগী থাকলে তাকে সবসময় হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করুন।

২) হার্ট সুস্থ রাখা- হাসলে রক্তচাপ থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই হাসার ফলে হার্টের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত পরিবাহিত হওয়ার ফলে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমন সুস্থ থাকে হার্টও। কমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও

৩) স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখা- হাসলে আমাদের শরীরে ক্ষরিত হয় এন্ডোরফিন নামক একধরণের হরমোন যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তাই হাসির ফলে স্ট্রেসও দূর হয়। এন্ডোরফিন হরমোন আর কর্টিসোল হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় হাসি, যা স্ট্রেস হরমোন বলে অধিক পরিচিত। ফলে দ্রুত মানসিক অবসাদের অবসান ঘটে।

৪) ফুসফুস ভালো রাখা- হাসার সময় ফুসফুস স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি প্রসারিত হয়ে থাকে। ফলে সেই সময় ফুসফুসে অধিক মাত্রায় অক্সিজেন প্রবেশ করে। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা কতটা তা সকলের জানা। এছাড়াও হাসার ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

৫) শরীর ও মনের ব্যায়াম- এর আগে বলা হয়েছে হাসার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকা থেকে শুরু করে মন ভালো রাখা, স্ট্রেস কমানো সবটাই করে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাসার ফলে শরীরে যে পরিমান ঝাঁকুনি পড়ে তার ফলে ক্যালোরি দ্রুত বার্ন হতে পারে। পেটের মেদ কমানোর জন্য হাসির থেকে ভালো ওষুধ খুব কম আছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ১০০ বার হাসা ১০ বার নৌকা চালানোর সমান উপকারী। এটি শরীরের মেদ ঝরাতেও প্রভূত সাহায্য করে থাকে।

তাই রাগ, দুঃখ, দুশ্চিন্তা সবকিছুকে দূরে সরিয়ে রেখে হাসতে থাকুন। বহুযুগ আগে থেকেই হাসির উপকারিতার কথা মাথায় রেখে শহরের নানা জায়গায় গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন লাফিং ক্লাব। আগে লোকজন নিয়ম করে লাফিং ক্লাবে যেত কিন্তু বর্তমানে মানুষজন খুবই ব্যস্ত। নিয়ম করে হাসা হয়না হয়তো আর। কাজের শেষে কিছুটা সময় নিজের জন্য বের করে সেই সময়টায় প্রাণ খুলে হাসুন। দেখবেন অনেক রোগ নিজে থেকেই কমে গেছে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...