কিছুই জানতেন না মা, টিভিতে দেখে চোখে জল জলপাইগুড়ির কৌশিকের মায়ের

বুধবার দুপুরেই ছেলে ফোনে মাকে বলেছিল সন্ধ্যায় টিভিতে নজর রেখো। তাই বিকেল থেকেই টিভির সামনে বসেছিল তাঁর মা। কিছুই জানতেন না মা। সন্ধ্যায় চাঁদে সফল হয় চন্দ্রযান ৩। ইতিহাস গড়ল ভারত। জয়ের স্থপতিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলেও। টিভিতে ছেলেকে দেখে কথা সরছিল না মায়ের। জলপাইগুড়ির মোহন্ত পাড়ার ছেলে কৌশিক নাগের কৃতিত্বের কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে এল মা সোনালি দেবীর। এই অসাধ্য সাধন করে একদিকে যেমন ইসরোর সকলে হাসছেন ঠিক অন্যদিকে নিজের বাড়িতে বসে আপ্লুত কৌশিকের মা।

1692834652_koushik-nag-isro (1)

বুধবার সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করে ল্যান্ডার বিক্রম। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবেই চাঁদের দক্ষিণ মেরু জয় ভারতের। সেই জয়ের কারিগরদের মধ্যেই রয়েছে জলপাইগুড়ির কৌশিকের। টিম ইসরোর সদস্যদের উচ্ছ্বাসের ছবি টিভির পর্দায় দেখাতেই কৌশিককে চিনতে পেরে হতবাক হয়েছেন তাঁর পরিচিতেরা। কৌশিকের মাও জানতেন না যে তার ছেলেও রয়েছে ইসরো বিজ্ঞানীদের মধ্যে।

জলপাইগুড়ির এক বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে কৌশিক নাগ। ২০১১ সালে জলপাইগুড়ির গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পাস করে ২০১৮ সালে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় যোগ দেন।

এর আগে, ২০১৯ সালের চন্দ্রযান-২ এরও সদস্য ছিলেন তিনি কিন্তু সেবারে অল্পের জন্য ব্যর্থ হয়েছিল লক্ষ্য। তবে এবার সেটা হয়নি, এই প্রোজেক্টের ব্যাপারে মাকে কিছুই জানাননি কৌশিক। মা জেনেছেন বুধবার সকালে। টিভি স্ক্রিনে ইসরোর বিজ্ঞানীদের উচ্ছ্বাসের ছবির মধ্যে দিয়ে গোলাপি শার্ট পরা বছর একত্রিশের কৌশিক নাগকে চিনতে কেউই ভুল করেনি। মুহুর্তের মধ্যেই সেই ছবি ভাইরাল হয় যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

কৌশিকের মা সোনালি দেবী এক সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “বিকেল পাঁচটা থেকে টিভি খুলে বসে আছি। সন্ধেয় চন্দ্রযান ছুঁল চাঁদের মাটি। ছেলেকে টিভির পর্দায় দেখে ভাবতেই পারিনি এমনটাও হতে পারে।”  তিনি আরও জানালেন, “দেশের জন্য গর্ববোধ হচ্ছে। এই কর্মযজ্ঞে আমার ছেলেরও অবদান রয়েছে, এটা ভেবে আরও ভাল লাগছে।” কৌশিকের স্কুল কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরা সহ গোটা জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা তাঁর কৃতিত্বে খুবই খুশি এবং গর্বিত।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...