আইকিউ বাড়ানোর কৌশল

স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার সাথে সাথে সকলের উচিত আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের দিকেও সমানভাবে খেয়াল রাখা| শরীর একটু খারাপ হলেই আমরা চিকিৎসকের কাছে ছুটে যাই| কিন্তু মানসিক কোনো সমস্যা হঠাৎ দেখা দিলেও আমরা তা সাময়িক অসুবিধা ভেবে এই নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই না| কিন্তু এই অভ্যেসটাই আমাদের মস্তিষ্কের বিশেষ করে বুদ্ধিমত্তার যাবতীয় ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট|

আইকিউ বা ইন্টেলিজেন্স কুওশিয়েন্ট(Intelligence Quotient) হলো আসলে আমাদের বুদ্ধিমত্তার সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিমাপ|একজন মানুষের বুদ্ধিমত্তার পরিমাপ করা হয় বিশেষ একপ্রকার টেস্টের মাধ্যমে| সেই টেস্টে পাওয়া নাম্বারের উপর ভিত্তি করেই বলা হয় সেই ব্যক্তির আইকিউ কত| সাধারণত ১০০ থেকে এই পরিমাপ শুরু হয়| এটিই হল অ্যাভারেজ আইকিউ নাম্বার| এর থেকে যাদের আইকিউ নাম্বার বেশি আসে টেস্টে তাদের স্বাভাবিকভাবেই অধিক বুদ্ধিসম্পন্ন বলে ধরে নেওয়া হয়| আর যাদের নাম্বার ১০০এর কম আসে তাদের বুদ্ধি অন্যদের তুলনায় একটু কম বলেই মনে করা হয়|

একজন মানুষের আইকিউ স্কোর আসলে ক্যালকুলেট করা হয় এইভাবে- সেই মানুষটির মানসিক বয়সকে তার ক্রমবর্ধমান বয়স দিয়ে ভাগ করে যে সংখ্যাটি পাওয়া যায় তাকে ১০০ দিয়ে গুন করতে হয়| এর ফলে প্রাপ্ত সংখ্যাটিকেই বলা হয় সেই মানুষটির আইকিউ| একজন মানুষের আইকিউ সারাজীবন এক জায়গায় থাকে না| সময়ের সাথে সাথে তা বাড়তে ও কমতে থাকে| শিশুকালে একজন মানুষের যে আইকিউ থাকে স্বাভাবিকভাবেই বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই আইকিউ বাড়তে থাকে| কিন্তু একবার পরীক্ষা করানোর পর সেই বছর আবর টেস্ট করলেও কিন্তু একই ফলাফল আসবে| কারণ মানুষের এই আইকিউ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্টেবল হয়ে থাকে| তাই ধীরে ধীরে বয়স যত বাড়তে থাকে তার আইকিউ নাম্বার তত স্টেবল হতে থাকে এবং একসময় দেখা যায় সংখ্যাটি একটি সংখ্যাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে|

অনেকক্ষেত্রেই আমরা অনেক কারণবশত কম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে ফেলি| তখনই আমরা ভাবতে শুরু করি কিভাবে বুদ্ধি বাড়ানো যায়? অনেকসময় শিশুরা একটু বোকা প্রকৃতির হয়ে থাকলে তাদের বাবা-মায়ের মাথায় এই চিন্তা ঢোকে যে কিভাবে সেই শিশুর বুদ্ধি বাড়াবেন! চলুন আজ আমরা কিভাবে বুদ্ধি বাড়ানো যায় সেই নিয়ে আলোচনা করি|

বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য প্রথমেই চাই কিছু সুঅভ্যেস যেমন বই পড়ার অভ্যেস| মনোবিদরা জানাচ্ছেন, প্রতি সপ্তাহে যদি একটি করে গল্পের বই পড়া হয় তাহলে অনেকক্ষেত্রেই বুদ্ধির বিকাশ ঘটে|

এছাড়াও সেই গল্পের প্যাটার্নগুলি প্রতিবার নতুন গল্প পড়ার সাথে সাথে মনে রাখা যায় তাহলে তো কোনো কথাই নেই|

গল্পের বই পড়তে যদি ভালো না লাগে তাহলে যেকোনো ব্রেন গেম ট্রাই করতে পারেন| শিশুর ক্ষেত্রে এইভাবেই খেলার ছলে নানা জিনিস মনে রাখার অভ্যেস করানো ভালো| নানা রকম মেমরি গেম খেলা যেতে পারে|

বয়সকালে বুদ্ধির ছুরিতে শান দেওয়ার জন্য হাই কার্ডিও ব্যায়াম করা অভ্যেস করা উচিত|

বুদ্ধি বাড়াতে ভালো কোনো মিউজিক্যাল বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার শিখে নিন| বিজ্ঞানীরা জানালেন, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান শেখা আসলে ফুল বডি ওয়ার্ক আউটের সমান ফল দেয়|

এই পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করার সাথে সাথে আইকিউ সংক্রান্ত যেসকল বই বাজারে পাওয়া যায় সেগুলি একটু ফলো করার চেষ্টা করুন| সেখানে লেখা বুদ্ধি বাড়ানোর পদ্ধতিগুলিও ধীরে ধীরে অভ্যেস করার চেষ্টা করুন| তাহলেই দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার বুদ্ধির সামান্য হলেও উন্নতি হয়েছে|     

   

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...