মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার পদ্ধতি

শরীর স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য আমরা প্রতিদিন মেনে চলি নানা বাধানিষেধ থেকে শুরু করে নানা পরামর্শ। কিন্তু শরীরের খেয়াল রাখার সাথে সাথে দরকার মনেরও খেয়াল রাখা। কারণ সারাদিনের কাজের বোঝা পুরোটাই বইতে হয় এই ছোট্ট মস্তিস্ককে। তাই শরীরের পাশাপাশি মন সুস্থ থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।

মনের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য দরকার একটি সুন্দর ডায়েট মেনে চলা। কি ভাবছেন? মস্তিষ্কেরও আবার ডায়েট?  হ্যাঁ, সুন্দর ডায়েট সুন্দর এবং স্বাস্থ্যবান রাখে মন তথা মস্তিস্ককে। সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিনের খাবারে কাঁচা শাকসবজি, ডাল, বিনস, বাদাম, মাছ, পোল্ট্রির ডিম এবং চিকেন রাখলে উপকার পাওয়া যায়। তার সঙ্গে খাবারের তালিকা থেকে ভাজাভুজি, মাখন, রেড মিট, চিনির মতো খাবার পরিত্যাগ করার পরামর্শও দিচ্ছেন ডাক্তার তথা নিউট্রিশনিস্টরা।

শুধু খাবার নয় সঙ্গে পরিবর্তন আনতে হয় জীবনধারাতেও। প্রথমেই উচিত ধূমপান বন্ধ করা। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা প্রতিদিন দুই প্যাকেটের থেকে বেশি সিগারেটের ধোঁয়া পান করেন তাদের ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়া হওয়ার আশংকা বেশি থাকে। যারা সারাদিনে দেড় প্যাকেটের বেশি সিগারেট পান করে সেক্ষত্রে সেই ব্যক্তির ডিমেনশিয়া হওয়ার আশংকা থাকে ৪৪ শতাংশ।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অবশ্যই উচিত একটি সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা। সুন্দর সম্পর্কের ঘেরাটোপে থাকলে শরীরের সাথে সাথে ভালো থাকে মনও। সম্পর্কে থাকার অর্থ কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা নারীর সাথে সম্পর্ক নয়। পরিবারের সঙ্গে এক স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক, স্বজনবান্ধবের সাথে সম্পর্ককেও এই আওতায় রাখা হয়েছে। সম্পর্কে অবনতি বা কলহ সবচেয়ে বেশি আঘাত দেয় মনকে বা মস্তিস্ককে। যার থেকে নিঃসঙ্গতা, ফ্রাস্ট্রেশন, জীবনের প্রতি অনীহা প্রভৃতি সৃষ্টি হয় তা মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। তাই মন ভালো রাখতে সকলকে ভালোবাসুন।

মনে আছে, 'ওম শান্তি ওম'-এ শাহরুখ খানের বিখ্যাত ডায়লগ "আগর সাচ্চে দিলসে কুছ মাংগো"....

মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সমসময়ে চিন্তাভাবনায় আনুন ধ্বন্যাত্মক ভাব। পজিটিভ চিন্তাভাবনার ফলে খুশি থাকে মন ফলে সব কাজ ভালো হতে থাকে। সাইকোলজিতে একে বলা হয় পিগম্যালিওন এফেক্ট। একটি গবেষণার দ্বারা প্রমাণিত যে, পজিটিভ চিন্তাভাবনা জীবনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট সহায়ক। যে সবসময় ধ্বন্যাত্মকভাবে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে তারা জীবনে অবশ্যই এগিয়ে যায় আর যারা সবসময়ে হেরে যাওয়ার কথা ভাবে তাদের জীবনে হার অবশ্যম্ভাবী। তাই মনে জোর নিয়ে এগিয়ে চলুন। এতে মন যেমন ভালো থাকবে তেমন মস্তিষ্কও  সুস্থ থাকবে।

এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যেস ছাড়াও পরিবর্তন আনতে হবে জীবনযাপনে। পরিমিত খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা প্রভৃতি যেমন শরীর সুস্থ রাখার সহায়ক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতেও সক্ষম। অবসর সময়ে নানা বুদ্ধির গেম খেলা, নানা রকম ধাঁধার বই পড়া অভ্যেসের মধ্যে রাখলে উপকার পাওয়া যায়। মন ভালো থাকলে শরীর নিজে থেকেই  ভালো হয়ে যায়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...