গোবর্ধন উৎসব কেন পালিত হয়?

প্রতিবছর হেমন্ত কার্তিকে পালিত হয় গোবর্ধন উৎসব। এই উৎসবে পূজিত হন শ্রীকৃষ্ণ৷ দীপাবলীর পরের দিন কার্তিক মাসের শুক্লাপক্ষের প্রতিপদে দেশ জুড়ে পালিত হয় এই পার্বণ।

গোবর্ধন পুজোর সূচনা করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। ব্রজধামে তিনি ঘটিয়েছিলেন গোবর্ধন লীলা।

পুরাণ কাহিনি অনুসারে,  বৃষ্টিপাতের জন্য দেবরাজ ইন্দ্রের পুজো করতেন বৃন্দাবনবাসী। গরীব বৃন্দাবনবাসীকে ইন্দ্রের পুজোয় তাঁকে সন্তুষ্ট করতে নিঃস্ব হইয়ে ব্যয় করতেন। যার কারণে তাঁদের ক্লেশে পড়তে হত। এই বিষয়টি পছন্দ করেননি শ্রীকৃষ্ণ। তিনি বহুমূল্য খাবার ইন্দ্রকে না দিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের খাওয়াতে বলেন। কৃষ্ণের কথায় বৃন্দাবনবাসী ইন্দ্রের পুজো বন্ধ করে দিলে তিনি রেগে গিয়ে বৃন্দাবন প্রবল বৃষ্টি শুরু করেন।

বৃষ্টিতে গোটা বৃন্দাবন ভেসে যেতে বসলে শ্রীকৃষ্ণ এই বিপদ থেকে তাঁদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। বৃন্দাবনের গোবর্ধন পাহাড় নিজের আঙুলের ডগায় অনায়াসে তুলে ফেলেন শ্রীকৃষ্ণ। তার নীচে আশ্রয় নেন বৃন্দাবনের সকল মানুষ ও গবাদি পশু। টানা সাত দিন এক ভাবে আঙুলের ডগায় গোবর্ধন পর্বতকে তুলে দাঁড়িয়ে থাকেন কিশোর শ্রীকৃষ্ণ। তখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে সেই প্রবল বৃষ্টি বন্ধ করেন দেবরাজ ইন্দ্র। সেই থেকে দীপাবলির পরের দিন গোবর্ধন পুজো হয়ে থাকে।

এই পুজোয় গিরিরাজ গোবর্ধনের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয়। এই দিনে অন্নকূটের বিশেষ গুরুত্ব বলে মনে করা হয়। শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করা হয় ৫৬ ভোগ।

এই উৎসবে ভাত, নানারকম ভাজা, তরকারি-সহ নানা খাবার সাজিয়ে পাহাড়ের মতো আকার দেওয়া হয়৷ শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করার পর তা প্রসাদ রূপে বিতরণ করা হয়৷

মথুরা ও বৃন্দাবন-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে দীপাবলির উত্‍সবের অঙ্গ হিসেবেই পালিত হয়। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, দীপাবলির পরের দিন গিরি গোবর্ধন তাঁর আঙুলের ডগায় তুলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।  ভক্তের বিপদে ভগবান কীভাবে রক্ষা করেন তার নিদর্শন।

এদিন 'গো-মাতা'র পুজো করে থাকেন অনেকে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...