ভাগীরথী আখ্যান

পঞ্জিকা মতে জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা দশমী তিথি ‘দশহরা’।

এই তিথি পুণ্য স্নানের তিথি। পতিতপাবনী গঙ্গা স্নানে মনুষ্য জীবনের দশ পাপ নাশ হয়। দেবী গঙ্গা সমস্ত কলুষ থেকে উদ্ধার করেন।

এই তিথিতেই দেবী গঙ্গা মর্ত্যলোকে নেমে এসেছিলেন। কথিত আছে, কপিল মুনির অভিশাপে সগরবংশ ধ্বংস হলে ভগীরথ কঠোর তপস্যায়  ব্রহ্মাকে তুষ্ট করে গঙ্গা কে মর্ত্যে আনার বর লাভ করেন । পথে জহ্নু  মুনির যজ্ঞ  ভূমি প্লাবিত করায়  মুনিবর কুপিত হয়ে  গঙ্গাকে নিঃশেষে পান করেন। পরে আবার  ভগীরথের স্তবে তুষ্ট  হয়ে তিনি জানু অর্থাৎ কর্ণ  ভেদ করে গঙ্গা কে মুক্তি দান করেন ।সেই জন্য জহ্নু মুনির সূত্রে  গঙ্গার নাম হয়  জাহ্নবী।  ভগীরথ কর্তৃক  আনীত গঙ্গায় সগর রাজার  ষাট হাজার  পুত্র জীবন লাভ করে। গঙ্গার অপর নাম হয় ভাগীরথী।

 মর্ত্যে  গঙ্গার অবতরণ হয়েছিল  জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে।  তাই এই তিথিকে  বলে গঙ্গা দশহরা। 

বৈদিক যুগের কোনও এক সময়ে দশহরা তিথি থেকেই বৎসর গণনা আরম্ভ হতো।  নববর্ষের মর্যাদা পেত দশহরা তিথি।

এই তিথিতে দশ ফলের অর্ঘ্য দিয়ে পুণ্য স্নান করলে দশ পাপ নাশ হয়। দেহগত পাপ, মনোগত পাপ, বাক্যগত পাপ- এই তিনের লয় হয়।

পরদ্রব্য হরণ, অযথা  প্রাণী হত্যা ও  অবৈধ প্রণয় এই তিনটি দেহগত পাপ।

অহংকারী বাক্য, মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা এবং অসংবদ্ধ প্রলাপ — এই চারটি বাক্যগত পাপ।

পরের দ্রব্যের কামনা, পরের অনিষ্ট চিন্তা এবং মিথ্যা আসক্তি— এই তিনটি মানসিক পাপ।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...