করোনায় অযথা আতঙ্ক নিষ্প্রয়োজন, বলছেন করোনাজয়ী এলিজাবেথ

করোনায় অযথা আতঙ্ক নিষ্প্রয়োজন, বলছেন করোনাজয়ী এলিজাবেথ। করোনা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে তেমনই বার্তা দিলেন আমেরিকার সিয়াটলের বাসিন্দা তরুণী এলিজাবেথ। ৩৭ বছর বয়সী ওই তরুণী জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি তিনি কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তিনি পুরোপুরি করোনা মুক্ত। 

আর তাই সুস্থ হয়েই তিনি নিজের করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং তার থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার কাহিনি শেয়ার করে মানুষকে করোনা সম্পর্কে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিলেন। 

ওয়াশিংটনের সিয়াটেলের বাসিন্দা এলিজাবেথ স্নাইডার একটি বায়োটেকনোলজি সংস্থার ম্যানেজার পদে কর্মরত। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস যেভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যেভাবে দ্রুতগতিতে একের পর এক মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছেন, ঠিক সেভাবেই এলিজাবেথও করোনায় আক্রান্ত হন। সেই সময়টা তাঁর কীভাবে কেটেছে, তিনি কী কী করেছেন, এই রোগের কীরকম লক্ষণ ছিল তাঁর ক্ষেত্রে-সেইসব তিনি পোস্টে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, আমেরিকার মধ্যে ওয়াশিংটন থেকেই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে। সেই ওয়াশিংটনের সিয়াটেলেরই বাসিন্দা এলিজাবেথ।

এলিজাবেথ তাঁর ওই পোস্টে লিখেছেন যে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি একটি পার্টিতে তিনি গিয়েছিলেন। তাঁর তিনদিন পর থেকেই তিনি অসুস্থতা বোধ করতে শুরু করেন। তবে করোনা ভাইরাসের যে লক্ষণগুলির কথা বলা হচ্ছে, তাঁর ক্ষেত্রে সেরকম কোনও লক্ষণ, যেমন- হাঁচি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট এসব কিছুই ছিল না। অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে যেমন দুর্বলতা হয়, তাঁর ক্ষেত্রে খানিকটা সেরকমই ছিল। এলিজাবেথ জানিয়েছেন যে, তার আগের সপ্তাহে তাঁর খুব পরিশ্রম হয়েছিল। তাই তিনি মনে করেছিলেন যে, সেই পরিশ্রমের কারণেই হয়ত তিনি দুর্বলবোধ করছেন। তবে মাথা ও গায়ে ব্যথা এবং জ্বর জ্বর ভাব ছিল।  প্রথমদিকে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দেননি বলেই জানিয়েছেন। কিন্তু দিন তিনেক পর তিনি দেখেন তাঁর ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর। সঙ্গে কাঁপুনি। যেহেতু তাঁর করোনার সাধারণ লক্ষণ- হাঁচি, কাশি শ্বাসকষ্ট কিছুই ছিল না, তাই চিকিৎসক তাঁকে সাধারণ জ্বরের ওষুধ দিয়ে, বিশ্রামের পরামর্শ দেন। এলিজাবেথ জানিয়েছেন যে, চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধে তেমন কাজ হচ্ছিল না। এর সঙ্গে তিনি জানতে পারেন যে, তিনি যে পার্টিতে গিয়েছিলেন, ওই পার্টির আরও কিছু সদস্যেরও একই ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এরপর আর দেরি না করে তিনি করোনা ভাইরাস টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেন। টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তবে ততদিনে তিনি আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তাই চিকিৎসকেরা তাঁকে হাসপাতালের বদলে বাড়িতেই আলাদা থাকার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে বিশ্রাম এবং প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এলিজাবেথ।  

এখন ওয়াশিংটনের সিয়াটেলের বাসিন্দা এলিজাবেথ স্নাইডার সম্পূর্ণ করোনা মুক্ত। সাতদিন ঘরবন্দি থাকার পর এখন তিনি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম করছেন। তবে তিনি এখনও সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করছেন। শেষে একথা বলতেই হয় যে, এলিজাবেথের কাহিনি শেখায়, আতঙ্কিত না হয়ে, আতঙ্ক না ছড়িয়ে, সুস্থ থাকতে, সতর্ক থাকতে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...