দার্জিলিং-এর চিড়িয়াখানার কেন বিশ্বজোড়া খ্যাতি?

দার্জিলিং বাঙালির আবেগ। প্রথম পাহাড় চিনতে শেখা এই শহর থেকেই। মেঘ, কুয়াশার ভিতর দিয়ে হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন চলে যায়। হাত পাড়ালেই নীল পাহাড়। রূপের জন্য এই শহর দেশি-বিদেশের ট্যুরিস্টের টান। এবার দার্জিলিং-এর আকর্ষণ  ‘পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক’।

0c7b36f7-e1bc-41b0-a45b-e960eb36b1df

দেশের মধ্যে সেরা চিড়িয়াখানার সম্মান পেয়েছে দার্জিলিং চিড়িয়াখানা। ২০২২-এর শেষের দিকে আসে এই সম্মান। কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ (CZA) দ্বারা সেরা চিড়িয়াখানা হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০১৪ সালেও দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানা স্কটল্যান্ডের ‘আর্থ হিরোস অ্যাওয়ার্ডস’ পেয়েছিল।

প্রায় ৭,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানায় পাঁচশোর বেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। এখানেই একমাত্র রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড, তিব্বতি নেকড়ে এবং পূর্ব হিমালয়ের বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখা যায়। পশুদের জন‌্য হাসপাতালও তৈরি করা হয়েছে এখানে। আছে ওপিডিও। পাঁচদিন পর্যন্ত ভরতি রেখে চিকিৎসা করা যায় পশুদের।

bf548145-10bb-4b0c-ad48-0a486eccd042

১৯৫৮ সালের ১৪ অগাস্ট পশ্চিমবঙ্গ গভর্নমেন্টের শিক্ষা বিভাগের হিমালয়ান প্রাণীজগত অধ্যয়ন ও সংরক্ষণের লক্ষ্য নিয়ে দার্জিলিংয়ের বার্চ হিল পাড়ায় ৬৭ একর জমির ওপর চিড়িয়াখানা তৈরি করা হয়েছিল। এর প্রথম পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দিলীপ কুমার দে। দিলীপ কুমার ভারতীয় বন পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

১৯ সালে সোভিয়েত প্রিমিয়ার নিকিতা ক্রুশ্চেভ দ্বারা ভারত সরকারকে এক জোড়া সাইবেরিয়ান বাঘ উপহার দেয়। সেই বাঘ স্থান পায় এই পাহাড়ি পশুশালায়।  চিড়িয়াখানায় এখন তুষার চিতা, পান্ডাস, গোরাল (পর্বত ছাগল), সাইবেরিয়ান বাঘ এবং বিভিন্ন ধরণের বিপন্ন পাখি যেমন বিপন্ন প্রাণী রয়েছে।

১৯৭২  সালের জানুয়ারিতে, পার্কটির  রেজিস্ট্রেশন হয়। এক চুক্তিতে ঠিক হয়  এই পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার উভয়ে বহন করবে।   

4facbd5d-8fe2-445d-9a83-9cb58b7a3356

১৯৯৩ সালের মে মাসে, পার্কটি পশ্চিমবঙ্গ বন বিভাগে স্থানান্তরিত হয়েছিল। ১৯৭৫  সালে পার্কটির নতুন নামকরণ করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এসেছিলেন চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে এসে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল প্রয়াত পপদ্মজা নাইডুর স্মৃতিতে উৎসর্গ করেন।

বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হওয়ার পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের এই চিড়িয়াখানায় তাদের প্রজননের জন্যও খ্যাত। রেড পাণ্ডার কৃত্রিম প্রজননের খ্যাত দেশজোড়া। ১৯৮৬ সাল থেকে এই প্রজনন প্রক্রিয়া চালু। যার জন্যে পৃথক প্রজনন কেন্দ্র ঘুমে চালু করেছে কর্তৃপক্ষ। স্নো লেপার্ডের প্রজনন হয় ১৯৮৩ সাল থেকে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...