হলিউডের সিনেমার বাজেটের থেকেও কম খরচে চন্দ্রযান-৩ পাঠালো ইসরো।

চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পাড়ি দেবার কথা ছিল ২০২১ সালে। কিন্তু দুই বছর দেরিতে মহাকাশে পাড়ি দেয় চন্দ্রযান-৩। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ইসরো এই মিশনের জন্য চেয়েছিলেন ৭৫কোটি টাকা।আপাতত সারা দেশ অপেক্ষা করছে ২৩শে আগস্ট দিনটার জন্য। এই দিন চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা চন্দ্রযান-৩ এর। প্রজ্ঞান রোভারের সাথে চন্দ্রযান-৩ এর বিক্রম ল্যান্ডার ২৩আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করবে। প্রত্যেক ভারতবাসীই অপেক্ষা করে আছে এই দিনটার জন্য। ইসরো ইতিমধ্যেই প্রতিদিন চন্দ্রযান-৩ এর তোলা ছবি প্রকাশ করেছে। চন্দ্রযান-৩ কে আগের সকল মুন মিশনের তুলনায় সবচেয়ে সাশ্রয়ী মিশন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত চন্দ্রযান-৩ এর জন্য সব থেকে কম অর্থ ব্যয় হয়েছে।

processed-b261ccc9-bf83-4356-bf86-1a586b71ba6c_ZAYFruNy

২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউড ফিল্ম ‘অবতার’ এর বাজেট ছিল প্রায় ১৯৭০ কোটি টাকা।চন্দ্রযান-৩ এর মোট বাজেট প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ অবতার ছবির খরচের মাত্র এক তৃতীয়াংশে ভারত চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপনে সফল হয়েছে।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের আর্থিক বাজেট মোট ৬১৫ কোটি টাকা। ডলারে হিসেবে করলে যা দাঁড়ায় ৭৫মিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালে চন্দ্রযান -২ ব্যর্থ হবার ফলে ২০২১ সালেই চন্দ্রযান-৩ মিশন শুরু হবার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারী বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অবশেষে,১৪ জুলাই ,২০২৩ এ এটির লঞ্চ করা হয়। তখন থেকেই চন্দ্রযানের অপেক্ষার প্রহর গোনা শুরু। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মতে (ইসরো) প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে সিভান জানান, এর জন্য প্রায় ৬১৫ কোটি টাকার বাজেট তৈরী করা হয়েছিল। রোভার এবং প্রপালশন মডিউলের খরচ প্রায় ২৫০কোটি টাকা এবং লঞ্চ পরিষেবার জন্য অতিরিক্ত ৩৬৫ কোটি টাকা অনুমান করেছেন। প্রাথমিকভাবে যে ৭৫কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ৬০কোটি রুপি সরঞ্জাম,যন্ত্রপাতি কিনতে ব্যবহৃত হয়েছিল। বাকি ১৫কোটি টাকা রাজস্ব ব্যয়ের জন্য চাওয়া হয়েছিল।

চন্দ্রযান-২ মিশনের আর্থিক বাজেটে ৯৭৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।এর মধ্যে অরবিটার, ল্যান্ডার, রোভার, নেভিগেশন এবং গ্রাউন্ড সাপোর্ট নেটওয়ার্কে ৬০৩ কোটি টাকা এবং জিও স্টেশনারী স্যাটেলাইট লঞ্চ ব্যবস্থায় ৩৭৫কোটি টাকা খরচ হয়েছে।চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডার ১৭ আগস্ট ২০২৩-এ প্রপালশন মডিউল ছেড়ে দিয়েছিল। সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো সে। এরপর অন্য পথ বেছে নেওয়া হল। এভাবেই  চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়াটা সহজ হল।১৮ আগস্ট দুপুরের আগে, বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রপালশন মডিউলটি ১৫৩ কিমি x ১৬৩ কিমি কক্ষপথে ছিল। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে দুজনেরই গতিপথ পরিবর্তিত হয়।বিজ্ঞানীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হল বিক্রম ল্যান্ডারের সফট ল্যান্ডিং। চাঁদের খুব কাছে পৌঁছে গেছে বিক্রম ল্যান্ডার। এখন তাকে সঠিক স্থান খুঁজে সঠিক গতিতে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করানোটাই হল আসল চ্যালেঞ্জ। এই কাজটি করতে হবে সোয়া লক্ষ কিলোমিটার দূর থেকে। বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত কঠিন কাজ এটি।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...