এশিয়ার তৃতীয় সেরা ভারত

এশিয়ায় ‘ফুল কনট্যাক্ট ক্যারাটে’-তে ভারতের মুখ উজ্বল করলেন চম্পা নাইয়া। সম্প্রতি, নেপালের কাঠমান্ডুতে আয়োজিত ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় স্থানের অধিকারী হলেন ক্যানিংয়ের এই দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিংয়ের বাসিন্দা তপন নাইয়া। স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনও মতে দিন চলত তাদের। এদিকে ছোট মেয়ে চম্পার স্বপ্ন ছিল ক্যারাটেতে বিশ্ব জয় করার। সেই স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করত তার বাবা। সংসারের আর্থিক হাল ফেরানোর জন্য কলকাতার মত শহরে পরিচারিকার কাজ করতেন তার মা লক্ষ্ণী দেবী। বাবা তপন নাইয়া ছিলেন রাজমিস্ত্রী। মেয়ের পড়াশোনা ও ক্যারাটের খরচ চালাতে গিয়ে হিম-শিম খেতে হচ্ছিল এই পরিবারের। আর্থিক সঙ্কটের জেরে নিজের গ্রামেই এমন প্রতিভা হারিয়ে যাওয়ার কথা জানতে পারেন ক্যারাটে প্রশিক্ষক ফিরোজ আলি সাঁপুই। চম্পাকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন তিনি। শুরু হয় চম্পার প্রশিক্ষণ। এরইমধ্যে এশিয়া কাপ ওপেন ‘ফুল কন্ট্যাক্ট ক্যারাটে টুর্নামেন্টের জন্য মনোনিত হয় চম্পা নাইয়া। আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয় পড়ে তার পরিবারের সদস্যরা।

তবে এখানেই শেষ নয়, দেখা দিল নয়া সঙ্কট, মেয়ে তো নেপালের প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিল, কিন্তু নেপাল যাওয়ার খরচ কোথা থেকে আসবে।  সেই নিয়ে যখন চিন্তিত মেয়ের বাবা ও মা, তখনই চম্পার ব্যাপারে জানতে পারেন মাতলা ১ ও ২ গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান হরেন ঘোড়ুই ও উত্তম দাস। বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত। আর তারই মান রেখেছেন চম্পা নাইয়া। এশিয়ার ক্যারাটে প্রতিযোগিতায়, যেখানে এশিয়া মহাদেশের ১০টি দেশ থেকে কয়েক হাজার প্রতিযোগি অংশগ্রহণ করে, সেখানে তৃতীয় স্থানের অধিকারী হয়েছেন চম্পা।চম্পার এই সাফল্যে আপ্লুত দুই পঞ্চায়েত প্রধান, সংবর্ধনা জানান চম্পা কে। এশিয়ার তৃতীয় সেরার খেতাব জিতে চম্পা নাইয়া ধন্যবাদ জানিয়েছেন দুই পঞ্চায়ের প্রধান ও তার প্রশিক্ষক ফিরোজ আলি সাঁপুইকে। তার মতে এনারা ঠিক সময়মত সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে দিলে হয়ত তার স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত সারাজীবন। 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...