ড্রাই ফ্রুটস-এর হাজার গুণ

বাঙালির রান্নাঘরে অবাধ যাতায়াত শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটসের। পায়েস থেকে শুরু করে পোলাও কিংবা হালুয়া সবক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ ড্রাই ফ্রুটসের। এছাড়াও পুষ্টিগুণের জন্য ড্রাই ফ্রুটসের চাহিদা বেশ রয়েছে বাজারে। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ড্রাই ফ্রুটসে থাকে প্রচুর পুষ্টিগুণ। কিন্তু রান্নায় দিয়ে দিলে তার পুষ্টিগুণ অনেকটাই কমে আসে বা কিছুক্ষেত্রে একেবারেই থাকে না। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ড্রাই ফ্রুটস রান্না না করে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। চলুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাই ফ্রুটসের কিছু উপকারিতা........

 

পুষ্টিবিদদের মতে, ড্রাই ফ্রুটসে স্বাদ যেমন আছে তেমনই আছে প্রচুর পরিমান পুষ্টি। প্রচুর পরিমান প্রোটিন ও ফাইবার থাকা ড্রাই ফ্রুটস আবার অতিরিক্ত পরিমান খাওয়াও শরীরের পক্ষে ভালো নয়। জেনে নিন কত টা পরিমান ড্রাই ফ্রুটস খেলে মেদও ঝরবে আবার শরীরও সুস্থ থাকবে...........

 

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন ৫০ গ্রাম ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালোকাজু, পেস্তা, আখরোট সমস্তরকম ড্রাই ফ্রুটস একসাথে মিশিয়ে রেখে দিন। সেখান থেকেই প্রতিদিন ৫০ গ্রাম করে খেতে থাকুন। দিনের বেলায় হালকা খিদে পেলে তখনই খান। গ্যাসের সমস্যা থাকলে বিকেলের দিকে বাদাম খেলে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। ড্রাই ফ্রুটসে কখনও নুন দিয়ে খাবেন না। বাজারে সল্টেড বাদামও পাওয়া যায়। সেই বাদাম বেশি না খাওয়াই ভালো।পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ফ্রেশ ফলের থেকেও ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে ৩.৫ গুণ পরিমান বেশি ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল বর্তমান। ড্রাই করার ফলে ভিটামিন সি এর পরিমান একেবারেই কমে যায়। ড্রাই ফ্রুটসে প্রচুর পরিমানে ফাইবারের পাশাপাশি থাকে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট এবং পলিফেনল। পলিফেনল এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট রক্তপ্রবাহ ইম্প্রুভ করতে সাহায্য করে, হজমে সাহায্য করে, শরীরে জারণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানেও ড্রাই ফ্রুটসের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

 

ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে অন্যতম হলো কিশমিশ। কিশমিশ অনেক রোগের হাত থেকে শরীরকে বাঁচায়। শুকনো আঙুর কিংবা কিশমিশে থাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, পটাশিয়াম এবং নানা হেলথ ইম্প্রুভিং ফ্যাক্টর কিশমিশ রক্তে শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে, শুকনো খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, পটাসিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিন। এর সাথেই এতে উপস্থিত থাকে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে।প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ ধর্মের জন্য শুকনো খেজুর বিশেষভাবে স্বীকৃত। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে শুকনো খেজুর অবশ্যই খাওয়া উচিৎ। শুকনো খেজুরে উপস্থিত থাকে বোরন নামক একধরণের মিনারেল যা অস্টিওপোরোসিসের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে থাকে। ড্রাই ফ্রুটসের তালিকায় আসে পাকা খেজুরের নামও। মিষ্টি স্বাদের খেজুরে উপস্থিত থাকে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, পটাসিয়াম, আয়রন এবং প্রচুর ভেষজ উপাদান। খেজুরের স্বাদ অতিরিক্ত মিষ্টি হলেও খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম হয়। তাই খেজুর খাওয়ার ফলে কখনো ব্লাড সুগারের লেভেল বাড়ে না। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া খুবই উপকারী।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, ড্রাই ফ্রুটসে প্রচুর পরিমানে প্রাকৃতিক শর্করা উপস্থিত থাকে। যেহেতু ড্রাই ফ্রুটসের থেকে সমস্ত জল শোষণ করে নেওয়া হয় তাই শর্করার সমস্তটাই একত্রিত হয়ে যায়। তাই ড্রাই ফ্রুটসে অতিরিক্ত পরিমানে শর্করা এবং ক্যালোরি দুইই উপস্থিত থাকে। সেই জন্য ‘সুগারি ক্যান্ডি’ হিসেবে ড্রাই ফ্রুটস খেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ড্রাই ফ্রুটসে অতিরিক্ত পরিমানে শর্করা উপস্থিত থাকে। তাহলে জেনে নিলেন ড্রাই ফ্রুটস এর নানা উপকারিতার কথা। তাই রোজকার খাদ্যতালিকায় ৫০ গ্রাম ড্রাই ফ্রুটস অবশ্যই রাখুন।    

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...