এবার কোনও প্রেক্ষাগৃহে নয়, সুন্দরবনে গিয়ে প্রিমিয়ার আয়োজন করল টিম ‘বনবিবি’!

এক সময় মাটিতে সতরঞ্চি বিছিয়ে বড় পর্দা খাটিয়ে ছবি দেখা হত। শীতের দিনে চাদরমুড়ি দিয়ে, গায়ে গা ঠেকিয়ে নানা বয়সের মহিলারা বসে পড়েন সিনেমাটি দেখার জন্য। কিন্তু সেইসব এখন অতীত।

বর্তমানেই অনেকেই প্রেক্ষাগৃহের দাম বেশি বলে সিনেমা দেখতে যেতে পারেন না। তাই প্রযোজক রানা সরকার করল ‘দুয়ারে সিনেমা’! হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। দর্শক যারা সিনেমা হলে পৌঁছতে পারেন না, তাঁদের জন্যই এবার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল টিম ‘বনবিবি’।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ সোমবার সুন্দরবনের মানুষদের গল্প সেখানেই দেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য, ছবির নায়িকা পার্নো, নায়ক আর্য, প্রযোজক, পরিচালক এবং কলাকুশলীরা।

image_2024_02_29T12_32_27_560Z

প্রযোজক রানা সংবাদমাধ্যমে সেই অভিজ্ঞতার কথাই ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে স্থানীয় মেয়েদের স্কুলপ্রাঙ্গনে ছবি দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। পুরনো দিনের মতো দেওয়াল জুড়ে ছবির পোস্টার পড়েছিল। আস্তে আস্তে ভিড় বাড়তে বাড়তে স্কুলের গেট পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এটাই তাঁদের কাছে একটা বড় প্রাপ্তি।

তিনি জানিয়েছেন যে প্রথমে স্থানীয় প্রথা মেনে সুন্দরী গাছের পাতা ব্যাজ হিসেবে প্রত্যেকের জামায় আটকে বরণ করা হয়। এরপর ভাষণ দেয় টিমের প্রত্যেকে। তাঁরা স্থানীয়দের কাছে জানতে চান যে কে কবে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে শেষ ছায়াছবি দেখেছেন? উত্তরে এল যে কেউ দেব তো কেউ মিঠুন চক্রবর্তীর ছবি শেষ দেখেছেন।

এছাড়া স্থানীয় তাঁদের জানিয়েছেন যে বহু যুগ পরে খোলা আকাশের নীচে সবার সঙ্গে বসে ছবি দেখার সুযোগ তাঁদের স্মৃতিসফর করিয়েছে। তাঁরা অনুরোধ করেন যে এভাবেই যদি দুয়ারে সিনেমা শুরু হয় তাহলে সকলের জীবনধারাই বদলে যাবে। বিশেষ করে তাঁদের জীবন নিয়ে তৈরি ছবি তাঁরা আরও বেশি করে দেখতে চান।

এই বিষয়ে অভিনেত্রী পার্নো জানিয়েছেন যে শহরের মাল্টিপ্লেক্সে তারকাখচিত প্রিমিয়ারে অভ্যস্ত তাঁরা। সুন্দরবনে এসে তাঁদের ছবিমুক্তি করে অন্য অনভূতি হয়েছে টিমের সকলের। সেটা তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। এদিন স্থানীয় বাসিন্দাদের ভীড় উপচে গিয়েছিল।  

পার্ণো আরও জানিয়েছেন যে এরকম দুর্দান্ত অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে খুব খুশি। এছাড়া বলিউড-টলিউডের জনপ্রিয় মুখ দিব্যেন্দু তিনিও খুব খুশি এবং প্রযোজককে জানিয়েছেন যে আগামী দিনে এই ধরনের আয়োজন যেন আরও হোক। আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি সবসময় পাশে থাকবেন।  

প্রযোজক জানিয়েছেন যে শহরের জনসংখ্যা মাত্র দেড় থেকে দু’কোটি। রাজ্যের সিংহভাগ লোকের বাস গ্রামে। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে বড়পর্দায় ছবি দেখার নেশা তাই গ্রামাঞ্চলে বাড়াতে হবে। তার জন্য এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। তখন ন্যূনতম দামের টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। ফলে, ইতিমধ্যেই বর্ধমান, বীরভূম, মেদিনীপুর থেকে ‘বনবিবি’ দেখানোর আমন্ত্রণ পেয়েছেন তাঁরা এবং রানা আশ্বাস দিয়েছেন যে তাঁদের ডাকে সাড়া দেবেন গোটা টিম।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...