সমুদ্রের তলা থেকে গায়েব গবেষণার যন্ত্র

সামুদ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য রাখার জন্য সমুদ্রের নিচে রাখা হয়েছিল একটি বিশাল যন্ত্র। কিন্তু সেই যন্ত্রটি হঠাৎ গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। গবেষণার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রটির ওজন ছিল প্রায় ৭৭০ কেজি। জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে শেষবার সংকেত পাঠিয়েছিল এই যন্ত্রটি। এরপর থেকে তার থেকে আর কোনো সংকেত পাননি বিজ্ঞানীরা।তারপর থেকেই এইভাবে বিশালাকার যন্ত্র গায়েব হয়ে যাওয়ার সাথে জড়িয়েছে এলিয়েনদের নাম। কারোর কারোর দাবি, ভিনগ্রহীরাই হয়তো সমুদ্রের তলা থেকে তুলে নিয়ে গেছে এই যন্ত্রটিকে

 

২০১৬ সালে জার্মান উপকূলে সমুদ্রতল নিয়ে গবেষণার জন্য সমুদ্রের অভ্যন্তরে স্থাপিত করা হয়েছিল এই যন্ত্রটিকে। যন্ত্রটির ছিল মোট দুটি অংশ- জিওমার এবং এইচজেডডি। স্থাপনের পর থেকেই অনবরত নানা তথ্য পাঠাচ্ছিল এই যন্ত্রটি। জলের লবণতা, মিথেনের ঘনত্ব সবটাই খেয়ালে রাখছিলো সে। জলে কতটা কার্বন ডাই অক্সাইড রয়েছে তার হিসেবেও রাখতো এই যন্ত্রটি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যন্ত্রটি বসাতে মোট খরচ হয়েছিল তিন লক্ষ ৩০ হাজার ডলার| ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম প্রায় দুই কোটি ৩৬ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সেই বিশালাকার যন্ত্রটিকে এমনভাবে সেই স্থানে বসানো হয়েছে যে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ না করলে সেই স্থান থেকে তাকে নড়ানো প্রায় অসম্ভব। তাই যন্ত্রটি হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়াতে বেশ চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এতবড় যন্ত্র সমুদ্রের তলা থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পিছনে যেসব কারণ থাকতে পারে তার মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ হলো, ১) কোনো বড় সামুদ্রিক প্রাণীর ধাক্কায় যন্ত্রটি বিকল হয়ে যেতে পারে, ২) ভূমিকম্পের ফলেও সমস্যা তৈরী হতে পারে যন্ত্রটিতে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জলের তলায় ডুবুরি নামিয়ে অনুসন্ধান করার পরেও সেখানে মাত্র দুটি কেবল ছাড়া আর কোনো যন্ত্রের খোঁজ মেলেনি। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই পাওয়ার কেবলগুলির মাধ্যমেই যন্ত্রের সাথে বিজ্ঞানীদের যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব ছিল।

 

এইভাবে গবেষণার যন্ত্র গায়েব হয়ে যাওয়ার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই এই নিয়ে হাসি মস্করায় মেতে ওঠেন নেটিজেনরা। মজার ছলেই অনেকে বলেন, হয়তো ভিনগ্রহী কোনো প্রাণীই এসে নিয়ে গেছে সেই বিশালাকার যন্ত্রটিকে। তবে এলিয়েনদের এই  যন্ত্র চুরির দাবি সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে বিজ্ঞানীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো প্রাকৃতিক কারণেই হয়তো যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে না সেই যন্ত্রটির সাথে। এই কাজ মোটেই ভিনগ্রহীদের নয়।    

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...