জেনে নিন এবছরের অম্বুবাচীর নির্ঘণ্ট

বাংলায় প্রবাদ আছে ‘কিসের বার কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত তারিখ অম্বুবাচী।’ মানে আষাঢ় মাসের ৭ তারিখ- এদিন থেকেই শুরু হয় অম্বুবাচী। এ বছর ২২ জুন শুরু হতে চলেছে অম্বুবাচী কাল। শেষ হবে ২৬ জুন।

অম্বুবাচী প্রবৃত্তিঃ অর্থাৎ শুরু হবে ২২ জুন অর্থাৎ ৬ আষাঢ় রাত ঘ ২.৩২ গতে এবং ২৬ জুন  অর্থাৎ ১০ আষাঢ় দিবা ঘ ২।৫৬ গতে এর নিবৃত্তিঃ অর্থাৎ সমাপ্তি হবে।

‘অম্বুবাচী’ র আক্ষরিক অর্থ ‘অম্বু’ বা জল সূচনা। এ ছাড়াও বলা হয় ‘রজোযুকক্ষ্মাম্বুবাচী’। আষাঢ় মাসের প্রথম ছ’দিন চল্লিশ দণ্ডে মৃগশিরা নক্ষত্রের শেষ দুই পাদে সূর্যের ভোগ হয়। তার পরে যে তিন দিন বিশ দণ্ড পর্যন্ত সূর্য আর্দ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদে থাকেন, তা-ই অম্বুবাচী। সূর্যের দক্ষিণায়নের দিন থেকে তিন দিন অর্থাৎ, আষাঢ় মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত দিনগুলিতে অম্বুবাচী পালন করা হয়।

জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে আদ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদে গমন করেন, তার পরবর্তী সেই বারের সেই কালে অম্বুবাচী হয়।  পৃথিবী এই সময়ে ঋতুমতী হন।

অম্বুবাচীর তিন দিন কোনও শুভ কাজ করা যায় না। চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে কোনও বাধা থাকে না। অম্বুবাচীর সময় ভূমিকর্ষণ ও বৃক্ষরোপণ নিষেধ। গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা যায় না। মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। এই সময় আম, দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। লোকবিশ্বাস, এই সময়ে আম ও দুধ খেলে এক বছর সাপের ভয় থাকে না।

এই অনুষ্ঠানে বিধবা মহিলারা তিন দিন ধরে ব্রত রাখেন। অম্বুবাচীর আগের দিন রান্না করা খাবার তারা তিন দিন ধরে খান। ঐ তিন দিন তারা কোনও গরম খাবার খান না। তিন দিন কামরুপ কামাখ্যায় পুজো হয়। সমস্ত দেবী মন্দির বন্ধ থাকে। অম্বুবাচীর পর নতুন করে ফলবতী হয়ে ওঠে পৃথিবী।

তন্ত্র সাধনার মহাপীঠ অসমের গুয়াহাটিতে কামাক্ষ্যা মন্দিরে দেবী সতীর গর্ভ ও যোনীদেশ পড়েছিল। প্রতিবছর অম্বুবাচীর তিনদিন এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দেশ বিদেশ থেকে ভক্তরা আসে মন্দিরে। এই সময় দেবী দর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অম্বুবাচী নিবৃত্তির দিন দেবীর স্নান ও পূজা শেষ হওয়ার পরে দর্শনের অনুমতি মেলে।  

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...