ঘুরে বেড়ান বাংলা ঝাড়খণ্ডের রুক্ষ উপত্যকায়

শিল্পী সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। জন্ম ১৯৬৬ পশ্চিমবঙ্গের রেল নগরী চিত্তরঞ্জনে। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে সাইকেলে শুরু হয়েছিল প্রথম প্রকৃতি দর্শন। সেই দেখা আজও শেষ হয়নি। আজও সময় পেলে ঘুরে বেড়ান বাংলা ঝাড়খণ্ডের রুক্ষ উপত্যকায়। একটা পোস্টকার্ড মাপের শক্ত পিচবোর্ডের মাঝখানে চৌকো করে কাটা। এই ছিল তার শৈশবের 'ভিউ ফাইন্ডার' । এই ভাবেই দেখতে শিখিয়েছিলেন অজিত চৌধুরী। তার কাছেই সঞ্জয়ের প্রথম ছবি আঁকার হাতেখড়ি। পরবর্তীতে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ক্লাস করা সম্ভব হয়নি রেলে চাকরী পাওয়ার কারণে। পরবর্তী সময়ে বিড়লা একাদেমিতে শিল্প শিক্ষা, শিক্ষক হিসাবে পান বিখ্যাত জলরঙ শিল্পী প্রদীপ মৈত্রকে।

আজ অবধি জল রঙেই মজে আছেন সঞ্জয়। প্রকৃতিপ্রেমী। ঝাড়খণ্ডের উঁচু নিচু ঢেউ খেলানো প্রান্তর তাঁর ছবির বিষয়,  তবে সবাই যে ভাবে ছবিতে প্রকৃতিকে উপস্থাপনা করেন সঞ্জয় সেভাবে নন,  তার ছবি সম্পূর্ণ আলাদা,  এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট শিল্প ঐতিহাসিক শোভন সোম বলেছিলেন- ‘তার ছবি সম্পূর্ণ আলাদা ছবি কারণ এই ভূ-প্রকৃতি বাংলার ছবিতে বিশেষ আসেনি। ' সঞ্জয়ের ছবি বিমূর্ত, উঠে আসে রূক্ষ প্রকৃতির পাথরের খাঁজ,  ঈষৎ জল,  বৃক্ষ বিরল,  যেন তার ছবি উপরের আকাশের সঙ্গে কথা বলে। ব্যবহার করেন উজ্জ্বল রঙ। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ালেও হুবহু প্রকৃতিকে আঁকা তার না-পসন্দ।

সারা ভারতের বিভিন্ন গ্যালারিতে একাধিক একক ও যুগ্ম প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। পেয়েছেন সর্বভারতীয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার। কলকাতার একাদেমির বার্ষিকী প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ জলরঙের ইন্দ্র দুগার পুরস্কার। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের চারুকলা পুরস্কার। ভূপালে আন্তর্জাতিক মিনিয়েচার ছবির প্রদর্শনীতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। কেমল্ড গ্যালারী আয়োজিত বার্ষিক প্রদর্শনীর পুরস্কার, কলকাতার ইন্ডিয়ান সোসাইটি অব ওড়িয়েন্টাল আর্ট এর পুরস্কার সহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। সন্মানিত হন কেরল সরকারের ললিতকলা থেকে। আমন্ত্রিত হন জাতীয় জলরঙের শিবিরে ভারতের বিশিষ্ট জলরঙের শিল্পী হিসেবে। এছাড়াও ডাক পান ভারতের বিভিন্ন শিল্প শিবিরে। সন্মানিত হন বহুবার। তার ছবির আলোচনা হয় বিদেশের বহু পত্র পত্রিকায়।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...